ঢাকা     শুক্রবার   ১০ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৭ ১৪৩১

আগামী এডিপিতেও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে বরাদ্দ বেশি থাকছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০০, ১ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আগামী এডিপিতেও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে বরাদ্দ বেশি থাকছে

অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে বেশি বরাদ্দ রেখে আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার প্রাথমিকভাবে দুই লাখ ২৯ হাজার ৯১০ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হচ্ছে। যা চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের চেয়ে মাত্র ১৩ শতাংশ বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ থেকে দেখা যায়, আগামী অর্থবছরের এডিপি উচ্চাভিলাষী হচ্ছে না। গত কয়েক অর্থবছর এডিপির আকার অনেকটা উচ্চাভিলাষী ছিল বলে বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। কিন্তু অর্থ বছর শেষে সেই এডিপি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এমনকি সংশোধিত এডিপিও বাস্তবায়ন করা যায়নি। এই বাস্তবতা এবং রাজস্ব আয়ের ধীরগতির কারণে আগামী অর্থবছরের জন্য বড় কোনো ধরনের এডিপি প্রণয়ন করতে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়।

বাস্তবায়ন সক্ষমতার অভাবে প্রতি অর্থ বছরই মূল বাজেটের এডিপি কাটছাঁট করে সংশোধিত এডিপি প্রণয়ন করা হয়। সংশোধিত এডিপিও পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। চলতি অর্থবছরের চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ অবস্থায় অর্থ মন্ত্রণালয় আগামী বাজেটের এডিপি নির্ধারণে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করছে।

সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল ও বাজেট বাস্তবায়ন সম্পর্কিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে যে এডিপি হাতে নেয়া হয়েছে তার আকার জিডিপির প্রায় ৭ শতাংশ। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এডিপির আকার রয়েছে দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা। সে হিসাবে চলতি অর্থ বছরের এডিপি চেয়ে আগামী অর্থ বছরের বাজেটের এডিপি ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উত্থাপনের সময় এডিপির আকার কিছুটা বাড়ানো হতে পারে। তবে সেটিও নির্ভর করবে রাজস্ব আদায়ের গতি ও বৈদেশিক সাহায্য কতটুকু পাওয়া যাবে তার ওপর।

আগামী অর্থবছরের এডিপির আকার সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের যে অর্থনীতি তাতে এডিপির আকার হওয়া প্রয়োজন প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার মতো; কিন্তু তা আমরা পারছি না। কারণ রাজস্ব আদায়ে হতাশাজনক পরিস্থিতি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা যে সোয়া তিন লাখ কোটি টাকা করা হয়েছে তা বছর শেষে কোনোভাবে আদায় করা সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে হিসাব করেছি বর্তমানে রাজস্ব আদায়ের যে গতি তাতে লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হলেও ঘাটতি থাকবে ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। কারণ চলতি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ, যা গতবারের চেয়ে কম, ফলে নেগেটিভ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়। যদি কাঙ্খিত মাত্রায় রাজস্ব আদায় না হয় তবে এডিপির জন্য যে পর্যাপ্ত অর্থের প্রয়োজন তা জোগান দেয়া সম্ভব হবে না। এই বিবেচনায় আগামী অর্থবছরে এডিপির আকার উল্লেখযোগ্যহারে বাড়ানো হচ্ছে না। তবে চূড়ান্ত হিসাবে তা কিছুটা বাড়তে পারে।

এদিকে, নতুন এডিপিতে চলমান প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বিশেষ করে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রকল্প বিশেষ করে অবকাঠামো খাতে যেসব প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান সেগুলোর প্রাধান্য থাকবে বেশি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলের মতো প্রকল্প। এছাড়া জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে থাকবে বিশেষ বরাদ্দ। শিক্ষা, মানবসম্পদে প্রয়োজন অনুসারে বরাদ্দ দেয়া হতে পারে।

জানা গেছে, নতুন এডিপিতে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর ব্যয়সীমা নির্ধারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে বছরভিত্তিক ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ বা এর বেশি, মধ্যম প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে ৮ থেকে ৯ শতাংশ এবং সাধারণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ শতাংশ ব্যয় প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে।


ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়