ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

উইঘুরদের কবরস্থানও ধ্বংস করে ফেলছে চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২১, ৩ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
উইঘুরদের কবরস্থানও ধ্বংস করে ফেলছে চীন

২০ বছর আগে নির্যাতনের ভয়ে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ শিনজিয়াং ছেড়েছিলেন উইঘুর কবি আজি ইসা এলকুন। বর্তমানে লন্ডনের বাসিন্দা এলকুন তার মাকেও ফোন করতে পারেন না। স্বজনদের কাছে তার মা জানিয়েছেন, ছেলে ফোন না করলেই তারা ভালো থাকেন। কারণ যতবার ছেলে ফোন করে ততবার পুলিশ বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ে।

২০১৭  সালে এলকুনের বাবা মারা যায়। বাবার জানাজায় যোগ দিতে চীনে ফিরে যাওয়া দূরের কথা, মাকে সান্তনা দিতে ফোনও করতে পারেন নি তিনি। শেষ পর্যন্ত গুগল আর্থের বদৌলতে বাবার কবরটি দেখে মনকে প্রবোধ দিয়ে রেখেছেন এলকুন।

উত্তর লন্ডনের বাসিন্দা এলকুন বলেন, ‘তার (বাবার) কবরটি ঠিক কোথায় তা আমি জানি। ছোটবেলায় আমরা নামাজ পড়ে সেখানে যেতাম, আমাদের স্বজনদের কবর জিয়ারত করতাম। পুরো সমাজ ওই কবরস্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত’।

দুই বছর ধরে বাবার কবর গুগল আর্থের মাধ্যমে নিয়মিত দেখতেন এলকুন। তবে গত জুনে তার চোখে বড় ধরনের পরিবর্তন ধরা পড়ে। ওই সময় গুগল আর্থের স্যাটেলাইট ছবি আপডেট করা হয়। সেই ছবিতে দেখা যায়, এলকুনের বাবাকে যেখানে সমাধিস্থ করা হয়েছিল সেই জায়গাটি আর কবরস্থান নেই। বরং পুরো জায়গাটিকে সমতল মাঠ বানিয়ে ফেলা হয়েছে।

এলকুন বলেন, ‘আমার কোনো ধারণাই ছিল না কী ঘটেছে। আমি পুরোপুরি স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিলাম’।

এটা কেবল এলকুনের একার ঘটনা নয়। গত কয়েক বছর ধরে চীন সরকার উইঘুরদের কবরস্থান ধ্বংস করে ফেলছে। মূলত শিনজিয়াং থেকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের চিরতরে নির্মূল করতেই এ ধরনের সমন্বিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বেইজিং।

সিএনএন জানিয়েছে, টানা কয়েক মাস অনুসন্ধানের পর তারা জানতে পেরেছে কয়েক বছরের মধ্যে শিনজিয়াংয়ের শতাধিক কবরস্থান ধ্বংস করা হয়েছে। চীনা কর্মকর্তারা অবশ্য একে ‘কবরস্থানের স্থানান্তর’ বলছেন।

গত বছরের অক্টোবরে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি প্রথমবার উইঘুরদের কবরস্থান ধ্বংসের খবরটি প্রকাশ করে। ওই সময় বার্তা সংস্থাটি জানায়, ২০১৪ সাল থেকে অন্তত ৪৫টি কবরস্থান ধ্বংসের খবর পেয়েছে তারা। এএফপির সাংবাদিক বেশ কয়েকটি কবরস্থানে গিয়েছিলেন এবং সেখানে হাড় দেখতে পেয়েছেন তারা। বিজ্ঞানীরা পরে নিশ্চিত করেছেন যে, এগুলো মানুষেরই হাড় ছিল।

সিএনএন জানিয়েছে, তারা এমন ৬০টি কবরস্থান চিহ্নিত করেছে যেগুলোর অস্তিত্ব এখন আর নেই। এসব কবরস্থান এখন ধূ ধূ ময়দান।

চীন সরকার অবশ্য কবরস্থান ধ্বংসের এই অভিযোগ অস্বীকার করেনি।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, শহরের পরিকল্পনা ও নির্মাণকাজ সম্প্রসারণে আকসু শহরের পশ্চিমের একটি  কবরস্থান স্থানান্তরের প্রয়োজন পড়েছিল।

 

ঢাকা/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়