ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ওয়ানডে ক্রিকেটের সেরা ১০ ম্যাচ (শেষ পর্ব)

রুহুল আমিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২১, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওয়ানডে ক্রিকেটের সেরা ১০ ম্যাচ (শেষ পর্ব)

রুহুল আমিন : সেই কবে শুরু হয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেট। এরপর অনেক খেলা হয়েছে। কিছু ম্যাচ থাকে একেবারে সাধারণ মানের, আবার কিছু ম্যাচ বেশ উত্তাপময়।

অনেক ম্যাচে রেকর্ডের ছড়াছড়ি হয়। ব্যক্তিগত রেকর্ড, দলীয় রেকর্ডসহ দর্শক দেখেন ক্রিকেট যে গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা তার সত্যতা।

আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে বহু রেকর্ডময় ম্যাচ আছে। তার মধ্য থেকে সেরা ১০টি ম্যাচের আজ পড়ুন শেষ পর্ব :

 



৬. ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম অস্ট্রেলিয়া, লডর্স (২১ জুন, ১৯৭৫) :  সব দলের জন্যই বিশ্বকাপ খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর তা যদি হয় ক্রিকেটের প্রথম সংস্করণের বিশ্বকাপ, তাহলে তো কোনো কথাই থাকে না। ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথমটির অফিশিয়াল নাম ছিল প্রোডেন্সিয়াল বিশ্বকাপ। ফাইনালে তখনকার শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া। আর তখন ওয়ানডে খেলা হতো ৬০ ওভারের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ক্লাইভ লয়েডের দুর্দান্ত ১০২ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৬০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯১ রান করে। ৮৫ বলে লয়েড ১০২ রান করেন। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য এই রান দেখে ভয় পায়নি। তবে ব্যাটিংয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের তোপের মুখে দাঁড়াতে পারেনি।  সেদিন দুর্দান্ত বল করেন ক্যারিবিয়ান বোলার কেইথ বয়েসসহ অন্য বোলাররা। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ৫৮ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রান করতে পরে। আর অস্ট্রেলিয়াকে ১৭ রানে হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দল হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

 



৭. অস্ট্রেলিয়া বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সিডনি (১ জানুয়ারি, ১৯৯৬) : বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজের পঞ্চম ম্যাচ এটি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লো স্কোরিং এই ম্যাচে দুই দলের ব্যাটসম্যানদেরকেই ব্যাপক নার্ভ পরীক্ষা দিতে হয়। বৃষ্টির কবলে পড়ে ম্যাচটি ৪৩ ওভারে নেমে এসেছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ কার্ল হুপারের ৯৩ রানের সুবাদে ৪৩ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রানের পুঁজি সংগ্রহ করে। অস্ট্রেলিয়া সেদিন বেশ নান্দনিক খেলা দেখায় বলা চলে। যদিও অসিদের টপ অর্ডার সেদিন পুরোপুরি ব্যর্থ ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ফিনিশার মাইকেল বেভান শেষ বল পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন। তিনি অনন্য উদাহরণ হয়ে সেদিন ৭৮ রানের এক ইনিংস খেলেন। শেষ উইকেটে গ্লেন ম্যাকগ্রাকে নিয়ে শেষ বলে অস্ট্রেলিয়াকে ১ উইকেটের জয় উপহার দেন বেভান।

 



৮. ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া, হায়দরাবাদ ( ৫ নভেম্বর, ২০০৯) : অস্ট্রেলিয়া এই ম্যাচে জিতলেও ভারতের খেলোয়াড়রাও দারুণ খেলেছিল। ম্যাচের শুরুটাই বোধহয় নির্দেশ করেছিল কারা এই ম্যাচ জিতবে। কারণ টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার শন মার্চ ও শেন ওয়াটসন ১৪৫ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে দলকে শুভ সূচনা এনে দেন। ৫০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৩৫০ রান যোগ করে। ভারত ম্যাচ হারলেও দিনটি ছিল সম্ভবত  লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকারের। তিনি সেদিন ১৪১ বলে ১৭৫ রানের এক মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেন। শেষ পর্যন্ত ভারত জিততে পারেনি। মাত্র ৩ রানে অস্ট্রেলিয়ার কাছে এই ম্যাচ হারে ভারত। জয়-পরাজয় যার হোক, দর্শকরা সেদিন অস্ট্রেলিয়া ও ভারতীয় ক্রিকেটারদের নান্দনিক খেলার সাক্ষী হয়েছিল।

 



৯. ইংল্যান্ড বনাম ভারত, ব্যাঙ্গালুরু (২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১১) : ক্রিকেটারদের মধ্যে শচীন টেন্ডুলকারেরই তো ফেসভেল্যু বেশি বলে ধরে নেওয়া যায়। লিটল মাস্টার খ্যাত শচীনের অনেক রেকর্ড। মজার ব্যাপার হলো, শচীনকে এই তকমাও খেলোযাড়ি জীবনে বয়ে নিতে হয়েছে যে, তিনি যেদিন রান করেন ভারত সেদিন হারে! শচীনের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ভালো হলেও সে দলের পরাজয় ঠেকাতে পারেনি। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে লিটল মাস্টার শচীনের ১২০ রানের সুবাদে ৪৯.৫ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে ভারত। কিন্তু ইংল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যান্ডু স্ট্রসের ১৪৫ বলে ১৫৮ রান সব হিসাব পাল্টে ফেলে। স্ট্রসকে যোগ্য সঙ্গ দেন ৭১ বলে ৬৯ রান করা ইয়ান বেল। ইংল্যান্ড নিজেদের সর্বোচ্চটুকু উজার করে সেদিন খেলেছিল। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডও ৩৩৮ রান করে। ফলে ম্যাচ টাই হয়। পয়েন্ট ভাগাভাগি হয় দুই দলের মধ্যে। 

 



১০. ভারত বনাম পাকিস্তান, শারজাহ (১৮ এপ্রিল, ১৯৮৬) : ভারত পাকিস্তান পৃথিবীর যে মাঠেই মুখোমুখি হোক না কেন, ক্রিকেট দর্শক বিশেষ করে উপমহাদেশের দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। ম্যাচটি ছিল অস্ট্রাল-এশিয়া কাপের ফাইনাল। এই ম্যাচে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয় আরব আমিরাতের শারজাহতে। ভারত সেদিন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখায়। ভারত সেদিন তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বোলিং ফিল্ডিং ও ব্যাটিংয়ে মোটামুটি ভালো করে। পাকিস্তান টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায়। ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪৫ রান করে। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯২ রান করেন গাভাস্কার। কিন্তু দিনটি ছিল পাকিস্তানের। পাকিস্তানের কিংবদন্তী খেলোয়াড় জাভেদ মিয়াঁদাদের কাছে সেদিন ভারত হেরে যায়। জাভেদ মিঁয়াদাদ ১১৪ বলে অপরাজিত ১১৬ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলেন। ফলে ১ উইকেটে পাকিস্তান ম্যাচ জিতে যায়।  



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জানুয়ারি ২০১৭/রুহুল/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়