ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনার দিনগুলো যেভাবে কাটছে চার তরুণীর

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৩, ২৭ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনার দিনগুলো যেভাবে কাটছে চার তরুণীর

বাম থেকে-শরীফা আক্তার আইরিন,ফাতেমাতুজ জান্নাত মৌ,হোসনে আরা পারভীন জলি ও হুমায়রা তাব্বাসুম

চলছে সাধারণ ছুটি।  করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবাই এখন বাসায় অবস্থান করছেন। তবে বাসায় থাকলেও তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে সচেতন নাগরিকরা বসে নেই।

কেউ অনলাইনে বসে অফিসের কাজ করছেন, শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন। আবার অনেকে সংসারের কাজ নিয়ে ব্যস্ত।

করোনাকালের দিনগুলো নিয়ে রাইজিংবিডির সাথে কথা বলেছেন চার তরুণী।

ফাতেমাতুজ জান্নাত মৌ
চাকরি করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।  করোনাকালের রুটিন নিয়ে তিনি বলেন বলেন, প্রতিদিন দেড়/দুই ঘণ্টা অনলাইনে অফিসের কাজ করি। নামাজ পড়ছি, কোরআন তেলাওয়াত নিয়মিত করছি।  রান্নাসহ বাসার সব কাজে আম্মুকে হেল্প করছি।  আগে  তো এই সুযোগটা পেতাম না।  প্রতিদিন বড় একটা সময় করোনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা, জার্নালে প্রকাশিত আর্টিক্যাল পড়ছি, রিসার্চ করছি। সেগুলো আবার নোট করছি।  ভবিষ্যতে এ বিষয়ে কিছু লেখার ইচ্ছা আছে।  সময়কে কাজে লাগিয়ে বিসিএস পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি।

তিনি বলেন, প্রতিদিন বিকেলে সাড়ে ৪ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত বাসার ছাদে হাঁটি, ব্যায়াম করি।  গান শুনি।  রাতে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপে কলে অংশ নেই।

আরেকটি কথা, অসহায়দের আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব হেল্প করছি।

মৌ বলেন, আমি মনে করি এই সময়ে শুধু শুয়ে-বসে সময় কাটানো নয়, সময়কে যত বেশি কাজে লাগানো যায়, সেদিকে প্রত্যেকের দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

হোসনে আরা পারভীন জলি
আইন পড়া শেষ করে কাজ করছেন আই. এইচ. খান অ্যান্ড এসোসিয়েটসে।  করোনার দিনগুলো নিয়ে জলি বলেন, নিজের পরিবার ও দেশের সবার সুরক্ষার কথা চিন্তা করে নিজেকে দীর্ঘ সময় ধরে গৃহবন্দি   রাখছি। ফ্যামিলিকে সময় দিচ্ছি।  রান্না করা আমার খুব পছন্দের।  অফিস করার কারণে আগে সময় পেতাম না। এখন হাতে অনেক সময়। তাই প্রতিদিন কিছু না কিছু রান্না করছি। নতুন নতুন রান্না শিখছি। বারান্দায় আমার কয়েকটা ফুল গাছ আছে।  প্রতিদিন গাছগুলোর পরিচর্যা করছি। সামনে আমার বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষা, পড়াটাও চালিয়ে নিচ্ছি।

আইন বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বই পড়ছি।  মুভি দেখছি।  গান শুনছি।  জলি বলেন, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি যেন আমাদের সবাইকে এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা করেন।

শরীফা আক্তার আইরিন
বিপিপি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধীনে লন্ডন কলেজ অফ লিগ্যাল স্টাডিজ সাউথে (এলসিএলএস) আইন শেষ বর্ষে পড়ছেন।

আইরিন বলেন, আমার কিছু দিন পরেই লাস্ট সেমিস্টার পরীক্ষা।  পড়াশুনা নিয়ে খুব ব্যস্ত আছি। দিনে ৭/৮ ঘণ্টা পড়াশুনা করছি।  অনলাইনে লন্ডন থেকে নেওয়া ক্লাসে অংশ নিচ্ছি।  আবার অনলাইনে লিখিত পরীক্ষা দিচ্ছি। পড়াশুনার ক্ষেত্রে এলসিএলএসের টিচাররা খুব হেল্প করছেন।

আব্বু রাজনীতিবিদ হওয়ার কারণে আগে তো কাছে পেতাম না।  এখন আব্বুর সাথে লাঞ্চ-ডিনার করছি।  বিভিন্ন বিষয়ে গল্প করছি।  মাঝে মাঝে আব্বুকে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াচ্ছি।  ফ্যামিলির সাথে টাইম পাস  করে  ভালোই লাগছে।  ফ্যামিলির সাথে সময় কাটানো সত্যিই সৌভাগ্যের  বিষয়।

আমি মনে করি করোনার এই সংকটময় মুহূর্তে যার যতটুকু সামর্থ আছে, যতটুকু পারি তা দিয়েই অসহায় মানুষের সাহায্য করা উচিত।

আইরিন বলেন, স্লোগান একটাই, Stay Home, stay safe and positive.

হুমায়রা তাব্বাসুম
মৌলভীবাজারের গ্রীন হিল ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। পাশাপাশি বার এট ল পড়ছেন।

হুমায়রা  বলেন, নতুন ব্যবসা শুরু করেছি।  বাসায় নিজে কেক বানিয়ে সেটা অনলাইনে ডেলিভারি দিচ্ছি।  ভালো সাড়া পাচ্ছি। বলতে পারেন বেকিং আমার প্যাশন ছিল।  করোনার দিনে এখন সেই শখটা পূরণ হয়েছে।

আমার বার এট ল এখনও কমপ্লিট হয়নি। পড়াশুনাও চালিয়ে যাচ্ছি। করোনার এই সংকটময় মুহূর্তে চ্যারিটি ওয়ার্ক করছি।  বাইরে থেকে ফান্ড কালেক্ট করে দিনমজুর, অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি।  এ পর্যন্ত ২০০ ফ্যামিলিকে এ সহায়তা দিয়েছি। নামাজ পড়ছি।

হুমায়রা বলেন,সবাই ঘরে থাকুন। নিজে নিরাপদে থাকুন,অপরকে নিরাপদে রাখুন।


মেহেদী/সাইফ/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়