করোনায় নতুন কৌশলে সক্রিয় মাদক কারবারিরা
ফাইল ফটো
করোনাভাইরাসের কারণে থমকে আছে জনজীবন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষের চলাফেরাসহ নিয়ন্ত্রণে সব প্রতিষ্ঠান। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠছে মাদক কারবারিরা। কৌশলে সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠাচ্ছে তারা। এক্ষেত্রে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে রাজধানী ঢাকা।
পুলিশ ও র্যাব সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক কারবারিরা ফেনসিডিল, গাঁজা, মদ, ইয়াবা সংগ্রহ করে প্রথমে ঢাকা আসছে। এরপর নির্দিষ্ট গন্তব্যে সেগুলো পাঠানোর চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে তারা মালবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ এমনকি প্রাইভেটকারও ব্যবহার করছে।
সূত্র জানায়, জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী বাহন মাদক রাখলে কারো সন্দেহ হবে না ভেবে মাদক কারবারিরা এটি ব্যবহার করছেন। তবে তারা গাড়ির বাইরের অংশ ব্যবহার না করে ভেতরে অর্থাৎ সিলিন্ডারের চেম্বার এবং গোপন জায়গা তৈরি করে সেখানে মাদক বহন করছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) রাজধানীর পান্থপথে র্যাবের চেকপোস্টে তল্লাশির সময় একটি পিকআপ থেকে ৪৪৩ বোতল ফেনসিডিলসহ মোহাম্মদ বাচ্চু ও মাহবুব আলম নামে দুজনকে আটক করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, আটকরা মূলত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাঁচামাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিয়ে আসে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা পিকআপের সিলিন্ডারের চেম্বারে মাদক বহন করছিল।
র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার ও পুলিশ সুপার মহিউদ্দীন ফারুকী বলেন, সীমান্ত এলাকা থেকে এরা ফেনসিডিল সংগ্রহ করে ঢাকার রাজারবাগে এক মাদক ব্যবসায়ীকে সরবরাহ করতে চেয়েছিল। ওই মাদক ব্যবসায়ীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
র্যাবের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, করোনাভাইরাস প্রদুর্ভাবের সুযোগ নিয়ে কক্সবাজার থেকেও মাদকের চোরাচালান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। দুপুরে ধানমন্ডি-২৭ নম্বর এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবাসহ দুজনকে আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন তথ্য পেয়েছে র্যাব।
শাহবুল ইসলাম ও মোহাম্মদ রতন নামে আটক দুই ব্যক্তি পাবনা জেলার বাসিন্দা। তারা কক্সবাজার থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা সংগ্রহ করে প্রাইভেটকারের সিটের ভেতরে কৌশলে রেখে দেন এবং এগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে পাবনা নিয়ে যাচ্ছিলেন। এজন্য রুট হিসেবে তারা রাজধানীকে ব্যবহার করছিল। তাদের ধারণা ছিল, করোনাভাইরাসের কারণে ঢাকায় কোথাও আটকে পড়লে জরুরি কিছু দেখিয়ে পার পেয়ে যাবে। তাবে পাচারকারীরা যে রুটে যাওয়ার চিন্তা করছিল ভুলের কারণে সে পথে যেতে পারেনি।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত সদস্যরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করলেও তাদের নিয়মিত কার্যক্রম যেন থেমে না থাকে সে বিষয়ে বলা হয়েছে।
মহিউদ্দীন ফারুকী বলেন, আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। মাদক কারবারিরা যে কৌশলে হাঁটুক না কেন তাদের দমনে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা/নূর/জেডআর
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন