ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জ মুক্ত হয়েছিল ১৭ ডিসেম্বর

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কিশোরগঞ্জ মুক্ত হয়েছিল ১৭ ডিসেম্বর

রুমন চক্রবর্তী, কিশোরগঞ্জ : ঢাকায় ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা সদলবলে আত্মসমর্পণ করলেও ঢাকার কাছের কিশোরগঞ্জ মুক্ত হয়েছিল তার পরের দিন।

সারারাত মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি আক্রমণ ও গোলাগুলিতে বিনিদ্র রাত কাটায় শহর ও শহরতলীর লোকজন। অবশেষে ১৭ ডিসেম্বর সে কাঙ্খিত মুহুর্তটি ঘনিয়ে আসে। ১৭ ডিসেম্বর সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদারদের হটিয়ে মুক্ত করে কিশোরগঞ্জকে।

১৭ ডিসেম্বর সকাল নয়টার দিকে শহরের পূর্ব দিক দিয়ে কমান্ডার কবীর উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের একটিদল কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। এর পর পরই অন্যান্য প্রবেশ পথ দিয়েও মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে শহরে প্রবেশ করতে থাকে।

স্বজন হারানোর ব্যথা ভুলে হাজার হাজার উৎফুল্ল জনতা রাস্তায় নেমে আসে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে কাঁপিয়ে তোলে আকাশ-বাতাস।

দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের বাড়ি শহর থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণে যশোদল ইউনিয়নে। আর এই জন্যই হয়তো ঘাতকের দল ঐ এলাকার মানুষকে বিশেষ টার্গেট করে। পাক হানাদাররা ১৩ অক্টোবর স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে আলোচনার কথা বলে  মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে (তাদের রক্ষা করবে বলে) আশপাশের গ্রাম থেকে প্রায় ছয় শতাধিক মানুষকে একসঙ্গে বড়ইতলায় জড়ো করে। সেখানে গুলিবর্ষণ ও বেয়নেট চার্জ করে খুন করে ৩৬৫ জন নিরীহ মানুষকে। সেদিন কোন রকমে বেঁচে যাওয়া কিশোর সিরাজুল ইসলাম মানিক সেই ঘটনায় তার বাবাসহ অনেক আত্মীয়-স্বজন হারানোর মর্মস্পর্শী বর্ণনা দিয়েছেন।



ওই দিন বেয়নেটের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েও ভাগ্যের জোরে বেঁচে গিয়েছিলেন চিকনিরচর গ্রামের শরাফত উদ্দিন ও তার বড় ভাই মোমতাজ উদ্দিন। আজও তারা সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন। যশোদল ইউনিয়নের নয়টি গ্রামের মানুষ এই হত্যাযজ্ঞের শিকার হলেও তারা আজও পাননি শহীদের মর্যাদা।

কিশোরগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. আসাদউল্লাহ বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আমরা  কিশোরগঞ্জ শহরকে চারদিক থেকে ঘেরাও করি। পরেরদিন ভোরের আযানের পর সকল হানাদারসহ পাক দোসররা আত্মসমর্পণ করে।’

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসউদ বলেন, ‘সেদিন যাদের নিমর্মভাবে হত্যা করা হয়েছিল তাদের পরিপূর্ণ তালিকা তৈরির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তালিকা তৈরির পর ইউনিয়ন পরিষদ অথবা জেলা পরিষদের মাধ্যমে সেখানে নির্মাণকৃত স্মৃতিস্তম্ভের সংস্কার এবং আধুনিকায়নের প্রয়াস চালাব।’



রাইজিংবিডি/কিশোরগঞ্জ/১৭ ডিসেম্বর ২০১৭/রুমন চক্রবর্তী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়