ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ক্যাসিনোর নিয়ন্ত্রকরা আত্মগোপনে

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্যাসিনোর নিয়ন্ত্রকরা আত্মগোপনে

বাংলাদেশে জুয়া ও ক্যাসিনো নিষিদ্ধ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের কারণে ক‌্যাসিনো ও জুয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ‌্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তদন্তে অনেকের নাম বেরিয়ে আসায় ক‌্যাসিনো ব‌্যবসার নিয়ন্ত্রকরা আত্মগোপন করেছেন। ক‌্যাসিনোর সঙ্গে কারো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলেই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সোমবার দুপুরে পুলিশের সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি- মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ‘পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ক‌্যাসিনোর নিয়ন্ত্রক, মালিক, সুবিধাভোগীদের বিষয়ে তদন্তে নেমেছে। মতিঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জুয়ার আসরগুলোর অনেক তথ্যই এসেছে। সেসব তথ‌্য যাচাই-বাছাই হচ্ছে। অভিযান চলছে। আরো অনেক তথ‌্য বের হয়ে আসবে।’

পুলিশের অনেকেই সুবিধা নিয়েছেন, এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোহেল রানা বলেন, ‘সেটাই তো বললাম। তদন্ত হচ্ছে। সময় দেন।’

পুলিশের কাছে তথ্য এসেছে, মোহামেডান, আরামবাগ, দিলকুশা, ওয়ান্ডারার্স, ভিক্টোরিয়া ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ফকিরাপুলে ইয়াংমেনস ক্লাবটি চালাতেন র‌্যাবের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া ও যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া। এছাড়া, যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমান, সোহরাব হোসেন স্বপন, সরোয়ার হোসেন মনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হক সাঈদ, নির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন, সেন্টু শিকদারই বিভিন্ন ক্লাবের ক্যাসিনোর নিয়ন্ত্রয়ক ছিলেন। সম্রাট সরাসরি ক্যাসিনো দেখাশোনা করতেন না। করতেন এসব নেতা।

গোয়েন্দারা বলছেন, ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমান ক্যাসিনো জগতে সম্রাটের গুরু। আরমান নোয়াখালী থেকে ঢাকায় এসে বায়তুল মোকাররমে লাগেজের ব্যবসা করতেন। হাওয়া ভবনে যাতায়াত করতেন। বিএনপির ছত্রছায়ায় ক্লাবপাড়ায় হয়ে ওঠেন প্রভাবশালী। ফকিরাপুলের কয়েকটি ক্লাবে ক্যাসিনো চালু করেন। নিজের টাকা দিয়ে প্রথমে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম ঢাকায় আনেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনিও দল পাল্টান। স্বপন ছিলেন ফ্রিডম পার্টির ক্যাডার। বিএনপির আমলে যুবদলে যোগ দেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে যুবলীগে যোগ দেন। জাতীয় পার্টি করলেও অবস্থান শক্ত করতে না পারায় যুবলীগে যোগ দেন মনা। ১৯৯১ সালে বিএনপির রাজনীতিতে আগমন ঘটে মোমিনুল হক সাঈদের। তবে সাঈদসহ অনেকের সঙ্গে সম্রাটের ঘনিষ্ঠতা ছিল। এই ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরে তারা ক্যাসিনো চালাতে শুরু করেন। বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক বনে যান। রাতারাতি দল পাল্টে যুবলীগ নেতা হন।

একটি গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, বুধবার রাতে ক্যাসিনো ও চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এসব নেতাকে পাওয়া যাচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাকরাইলের কার্যালয়ে সম্রাট থাকলেও তাকে এখন পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অন‌্যদের বাসা এবং সম্ভাব্য স্থানেও নজরদারি করা হচ্ছে। ক্লাবপাড়ায়ও তারা যাচ্ছে না। মোমিনুল হক সাঈদ সিঙ্গাপুর পালিয়েছেন বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে। অন‌্যরা আত্মগোপন করেছেন।


ঢাকা/মাকসুদ/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়