ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

খেলাপি ঋণ: আলোচনাতেই আটকে আছে কমিটি

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১২, ২৩ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খেলাপি ঋণ: আলোচনাতেই আটকে আছে কমিটি

নাসির উদ্দিন চৌধুরী : খেলাপি ঋণের কারণে দেশের ব্যাংক খাত দুরবস্থার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। এর লাগাম টেনে ধরতে বেকায়দায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খেলাপি ঋণ কমাতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও সাড়া মিলছে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে ঋণ আদায়ে বড় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ কমাতে সর্বশেষ বিশেষ কমিটি গঠন করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আটটি বিভাগ এ প্রতিবেদন তৈরিতে কাজ করবে। মূলত খেলাপি ঋণ কেন বেড়ে যাচ্ছে, খেলাপি ঋণ কমাতে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে- এসব বিষয়ে তারা প্রতিবেদন তৈরি করবে। প্রতিবেদন খুব দ্রুত জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত জমা হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া ও তা কমাতে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ কে এম আমজাদ হোসাইনের নেতৃত্বে যে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা প্রাথমিক আলোচনার মধ্যেই আটকে আছে। এছাড়া খেলাপি ঋণের বর্তমান অবস্থা সংগ্রহ করতে ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থা কী, তাদের খেলাপি ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ কী- এ বিষয়ে তথ্য নিতে হবে। আরো অনেক বিষয় রয়েছে, যা এখনো করা হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে জানান, কমিটি ফাইনালি কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তারা মিটিং করেছে। আশা করছি শিগিগিরই এ প্রতিবেদন জমা হবে।

প্রতিবেদন কবে নাগাদ জমা হতে পারে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘কয়েকটি ডিপার্টমেন্ট মিলে এই কাজ করছে। কবে নাগাদ এটি জমা হতে পারে তা ঠিক বলা যাচ্ছে না।

এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে খেলাপি ঋণ কমাতে দেয়া হয়েছে নানা সুবিধা। এর মধ্যে রয়েছে- সুদ মওকুফ, অবলোপন, পুনঃতফসিল, পুনর্গঠন, স্বল্প সুদে ঋণ।

এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপিদের নিয়মিত হতে দুই  শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারবেন। এই সুবিধায় সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে ১ বছর বাড়তি সুবিধাসহ সর্বোচ্চ ১০ বছরে ঋণের টাকা পরিশোধ করা যাবে। এক্ষেত্রে প্রথম ছয় মাস কোনো কিস্তি দিতে হবে না। এর মধ্যে (২ মাসে) খেলাপিরা নতুন ঋণ নিতে পারবেন না বলে আপিল বিভাগ এক আদেশ দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এর পরিমাণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৬ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। গত বছরের মার্চে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ কে এম আমজাদ হোসাইনের নেতৃত্বে বিশেষ কমিটিতে অফসাইট সুপারভিশন, ব্যাংক পরিদর্শনে নিয়োজিত চার বিভাগ, ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস এবং ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকরা রয়েছেন।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জুলাই ২০১৯/নাসির/সাইফ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়