ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঘরের কোথায় থাকে ডেঙ্গু মশা?

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪২, ৫ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঘরের কোথায় থাকে ডেঙ্গু মশা?

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডেঙ্গুর ভাইরাস বহনকারী এডিস মশা সাধারণত টেবিল, খাট, চেয়ার, সোফাসহ বিভিন্ন ফার্নিচারের নিচে, ফাঁক-ফোকড়ে, জানালা-দরজার পর্দা বা ঝুলিয়ে রাখা জামা কাপড়ের আড়ালে, আলমারি, ও্য়্যারড্রবের পিছনে, ঘরের কানায়-কোনায়, যেখানে একটু অন্ধকার, সেখানেই বসে বিশ্রাম নেয়। এরা কখনোই ঘরের দেয়ালে বসে না।

এডিস মশা প্রধানত সুর্যাস্তের দুই ঘণ্টা আগে থেকে সুর্যোদয়ের দুই ঘণ্টা পর পর্যন্ত মানুষকে কামড়ায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান কিটতত্ত্ববিদ ডা. ভুপেন্দর নাগপাল এসব তথ্য জানান।

ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে তিনি তথ্যভিত্তিক কারিগরি বিষয়াদি উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, এই মশা ৬০ থেকে ১০০ ডিম পাড়ে। তবে এক জায়গায় এরা সব ডিম পাড়ে না।

এডিস মশাকে স্মার্ট মশা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মশা বংশ বিস্তারে ডিম ফুটাতে উপযুক্ত জায়গা বাছাই করে প্রতি জায়গায় অল্প অল্প করে ডিম পাড়ে। যাতে এক জায়গার ডিম নষ্ট হয়ে গেলে অন্তত অন্য জায়গার ডিম থেকে বাচ্চা রেব হয়। ডিম পাড়ার পর তা অন্তত ১ বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকে। এই ১ বছরের মধ্যে স্বচ্ছ পানি পেলে আর সেই পানি তিন দিনের অধিক থাকলে ঐ ডিম থেকে এডিস মশার বিস্তার ঘটতে পারে।

এডিস মশা খুব অল্প পানিতে (৫ মিলি বা ১ চা চামচ পানি) ডিম পাড়ে যা পানি ছাড়াও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। পানি জমা পাত্রেই যে তারা ডিম পাড়ে এমন না। যে পাত্রে কখনো না কখনো পানি রাখা বা কোনো না কোনো ভাবে পানি জমতে পারে এমন পাত্র তারা বাছাই করে ডিম পাড়ার জন্য।

ডেঙ্গু রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকারে অবশ্য করনীয় হলো বাহক এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ ও প্রজননস্থল ধ্বংস করা, যার জন্য সবচেয়ে আগে দরকার জনসাধারনের অংশগ্রহণ।

ডিম থেকে বাচ্চা বের হবার আগ মূহূর্তে এক ধরনের লার্ভা তৈরি হয়। ওই লার্ভা ধ্বংসের জন্য টেমিফস (Temephos)-১ গ্রাম/ ১০লিটার পানিতে খুব কার্যকরী, যা ব্যবহার পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।

ডা. ভুপেন্দর নাগপাল বলেন, পরিত্যক্ত পরিবহন, হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন ও ডাম্পিং জোন, বিমান বন্দর, নার্সারী ও পার্ক, নির্মাণাধীন ভবন, সরকারি অফিস ও বাসার আশপাশে জমে থানা পানি বা যেখানে পানি জমতে পারে এমন জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখলে ডেঙ্গু সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

‘তবে নির্মানাধীন ভবনে ডেঙ্গুর প্রজননস্থল ধ্বংস করলে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো যায়।’-বলেন ডা. ভুপেন্দর নাগপাল।

তিনি জানান, শুধু বাংলাদেশ না, হালে ১২৬ টি দেশের মানুষ কম বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। একটু রহস্য করে নাগপাল বলেন, পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকিট ছাড়া এডিস মশা এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/০৫ আগস্ট ২০১৯/সাওন/নবীন হোসেন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ