ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ছক্কা বৃষ্টির ম্যাচে হেসেখেলে জিতল আফগানিস্তান

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ছক্কা বৃষ্টির ম্যাচে হেসেখেলে জিতল আফগানিস্তান

পঞ্চম উইকেট জুটিতে নজিবুল্লাহ ও মোহাম্মদ নবী ১০৭ রান যোগ করেন মাত্র ৩০ বলে। ছবি: মিলটন আহমেদ

ক্রীড়া প্রতিবেদক: আফগানিস্তানের ইনিংসে ছক্কা ১৫টি। জিম্বাবুয়ের ইনিংসে ১০টি। ম্যাচে মোট ছক্কা ২৫টি। আন্তর্জাতিক ম্যাচে মিরপুরে এত ছক্কা দেখেনি কেউ আগে। ২০১২ সালে সর্বোচ্চ ২১ ছক্কা হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশ ম্যাচে। ছক্কা বৃষ্টির এমন ম্যাচে হেসেখেলে জিতল আফগানিস্তান।

চোখের পলক ফেলার সময় দিচ্ছিলেন না নবী ও নজিবুল্লাহ। একের পর এক শটে বল পাঠাচ্ছিলেন বাউন্ডারির বাইরে। টানা সাত বলে সাত ছক্কা! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এমনটা দেখা যায়নি আগে। নবী চাতারার চারটি বল হাওয়ায় ভাসিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠানোর পর নজিবুল্লাহ মাদজিভার তিন বৈধ বলে তিন ছক্কা আদায় করলেন। চতুর্থটা ছয় হয়নি কয়েক মিটারের জন্য। নয়তো আট বলে আট ছক্কা হয়ে যেত।

শেষ পাঁচ ওভারে এই দুই ব্যাটসম্যান তোলেন ৮৮ রান। ১০৯ থেকে আফগানিস্তানের রান ১৯৭! তাদের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ের সামনে রানের পাহাড়। সেই পাহাড় টপকাতে পারেনি মাসাকাদজা, টেলররা। ৭ উইকেটে ১৬৯ রানে শেষ তাদের লড়াই। ২৮ রানে জিতল আফগানিস্তান। ত্রিদেশীয় সিরিজের দুই ম্যাচে দুই হার জিম্বাবুয়ের।

নবী ও নজিবুল্লাহর ৬১ বলে ১০৭ রানের জুটিতে মিরপুরে রান উৎসব হলো। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার নবীর ব্যাট থেকে এলো ১৮ বলে ৩৮ রান। নজিবুল্লাহ ৩০ বলে ৬৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকলেন। নামের পাশে পাঁচটি চার, ছয়টি ছক্কা। অবশ্য শুরুতে তাদের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন তরুণ ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ২৪ বলে পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় ডানহাতি ওপেনার ৪৩ রান তোলেন। তার বিদায়ের পর রানের চাকায় কিছুটা লাগাম পড়েছিল। কিন্তু শেষের ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

আফগানিস্তানের গোটা ইনিংসে চারের থেকে ছয় হলো বেশি। পাঁচ বাউন্ডারির সঙ্গে ওভার বাউন্ডারি ১৫টি। মিরপুরে এক টি-টোয়েন্টি ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয়ের রেকর্ড।  ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৪টি ছক্কা মেরেছিল।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় জিম্বাবুয়ের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। ব্রেন্ডন টেলর ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু রান আউটে কাটা পড়ে তাদের জুটি।  মাসাকাদজা তিন রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর দ্রুত তিন উইকেট হারায় তারা। ফরিদ মালিক এক ওভারে তুলে নেন টেলর ও শন উইলিয়ামসের উইকেট। পেসার করিম জানাত ক্রেইগ আরভিনকে এলবিডব্লিউ করেন। রিভিউ নিলে অবশ্য বেঁচে যেতেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অপরপ্রান্তে থাকা মুতুমবডজির থেকে সাড়া না পাওয়ায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাননি আরভিন। ৪৪ রান তুলতেই চার ব্যাটসম্যান ফেরেন সাজঘরে।

দশম ওভারে আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান বোলিংয়ে আসেন। প্রথম ওভারেই সাফল্য পেয়ে যেতেন। তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে বেঁচে যান রায়ান বার্ল। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বেঁচে যান বার্ল। তবে উইকেটের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি এ লেগ স্পিনারকে।  নিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারে তার শিকার মুতুমবডজি ও বার্ল। জিম্বাবুয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় সেখানেই।

পরের ব্যাটসম্যানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লড়াই করলেন সামান্য। চাকাভা চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ হাসি হাসতে পারেননি। ২২ বলে তিন চার ও দুই ছক্কায় সাজানো তার ৪২ রানের ইনিংসটি পরাজয়ের ব্যবধান কমায় মাত্র। রশিদ খান ও ফরিদ মালিক দুটি করে উইকেট নেন।

আগামীকালই মাঠে নামতে হবে আফগানদের। একই মাঠে তাদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক বাংলাদেশ। দুই দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারিয়েছে জিম্বাবুয়েকে। দেখার বিষয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে রোববার কে এগিয়ে যায়।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়