ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ছবি দেখে এসি রবিউলের মেয়ে বলে, ‘বাবা আসো’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ছবি দেখে এসি রবিউলের মেয়ে বলে, ‘বাবা আসো’

বাবাকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি কামরুন্নাহার রায়নার। জন্মের মাসখানেক আগেই বাবা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মো. রবিউল করিমকে হারায় সে। এখন বাবার ছবি দেখলেই সে বলে, ‘বাবা আসো’।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত হন এসি রবিউল।

প্রয়াত রবিউল করিমের স্ত্রী উম্মে সালমা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। ১০ বছরের ছেলে সাজিদুল করিম সামি ও চার বছরের মেয়ে কামরুন্নাহার রায়নাকে নিয়ে ধামরাইয়ের কালামপুরে বাবার বাড়িতে থাকেন। 

রবিউলের ভাই মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘রায়নার জন্মের মাসখানেক আগেই ভাইয়া মারা যান। মেয়েটা তার বাবাকে দেখতেও পেল না। তবে এখন সে বাবা হারানোর যন্ত্রণা বুঝতে পারে। ছবি দেখলেই ‘‘বাবা’’ বলে ডাকে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে খুব হৃদ‌্যতা। বোনের মন খারাপ হলে ভাই সান্ত্বনা দেয়, খেলনা নিয়ে আসে। খেলনা নিয়ে আসলে রায়নার মন ভালো হয়ে যায়।’

ভাবির (উম্মে সালমা) কষ্টের কথা তুলে ধরে শামসুজ্জামান বলেন, ‘অল্প বয়সে স্বামী নেই। চাপা কষ্ট ভাবির মনে। ছেলে-মেয়ের মুখের দিতে তাকিয়েই সব দুঃখ ভোলার চেষ্টা করেন।’

রবিউল করিম বাবাকে হারিয়েছিলেন ১৪ বছর আগে। এরপর থেকে পরিবারের সব দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। তাকে হারিয়ে অনেকটা একা হয়ে গেছেন শামসুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পর সব দায়িত্ব ছিল ভাইয়ার। সেই ভাইয়ার ছায়া আর নেই। আমরা ৫ বছরের ছোট-বড় হলেও দুই ভাইয়ের মধ্যে হৃদ্যতা ছিল। সব কথা ভাইয়ার সাথে শেয়ার করতাম। এখন তা আর পারছি না। বড় ভাই না থাকায় অভিভাবকত্বের দায়িত্ব পড়েছে আমার ওপর। নানা ধরনের সমস্যা ফেস করতে হচ্ছে। সব সময় ভাইয়াকে খুব মিস করি। মাঝে মধ্যে এমন সিচুয়েশন আসে, তখন ভাইয়ার জন্য কান্না পায়। আগে যেকোনো সমস্যা ভাইকে বললে সলভ হয়ে যেত। এখন আমাকে সেগুলো দেখতে হচ্ছে।’

২০১৬ সালে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা করে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। এ সময় অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন। সন্ত্রাসীরা রাতের বিভিন্ন সময়ে জিম্মি তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ২৭ নভেম্বর বিচারিক আদালত সাতজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।

এ রায় উচ্চ আদালতে বহাল থাকবে এবং দ্রুত কার্যকর হবে বলে আশা করেন শামসুজ্জামান।



ঢাকা/মামুন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়