ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ডিএসসিসির নির্দেশনা উপেক্ষিত, ফুটপাতে হকার

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০০, ৬ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডিএসসিসির নির্দেশনা উপেক্ষিত, ফুটপাতে হকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা।

সোমবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ চিত্র দেখা গেছে।

ডিএসসিসির পক্ষ থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার আগে বসতে নিষেধ করা হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের নির্দেশে অনেক হকার দোকান নিয়ে বসেছেন।

গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের ফুটপাতের ব্যবসায়ী সুজন রায় রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে দোকান করছি। পুনর্বাসন না মেয়র আমাদের উচ্ছেদ করেছেন। আমরা এখন কী করে খাব?  পেটের টানে দোকান নিয়ে বসেছি।

গুলিস্তানের ঢাকা ট্রেড সেন্টারের সামনের ফুটপাতে ফল বিক্রি করেন জাকির হোসেন। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এই দোকানের আয় দিয়ে দুটি পরিবার চলে। দোকান বন্ধ থাকলে ছেলে-মেয়ে না খেয়ে থাকবে, পাশাপাশি বাসা ভাড়া ও স্কুলের খরচ দিতে পারব না। সিটি করপোরেশন থেকে উচ্ছেদ করা হবে জেনেও দোকান নিয়ে বসেছি।

তিনি বলেন, উচ্ছেদের পর লাইনম্যানরা আগের চেয়ে চাঁদার পরিমাণ বাড়িয়েছে। আগে ১০০ টাকা দিতাম এখন ১৫০ টাকা। চাঁদা যখন দিতেই হবে সকাল থেকে ফুটপাতে বসছি। উচ্ছেদ শুরু হওয়ার আগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ফোন দেয়, দোকান নিয়ে চলে যাই। উচ্ছেদ শেষ হলে আবার দোকান নিয়ে বসি।  

এ ব্যাপারে ধানমন্ডির বাসিন্দা সৈকত শাহরিয়ার সঙ্গে গুলিস্তানে কথা হয়। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ডিএসসিসির উচ্ছেদের পর দিনের বেলায় হকার বসেনি। এখন উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ রাখার পর আবার হকাররা দোকান নিয়ে বসছেন।

তিনি বলেন, হকার বসায় সাধারণ মানুষ ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে না পেরে রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। তাই মেয়রের কাছে অনুরোধ আদালত ফুটপাতমুক্ত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। জনগণের হাঁটার জন্য ফুটপাত হকারমুক্ত রাখুন।

গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়ায় কথা হয় বংশাল থানার এক উপপরিদর্শকের (এসআই) সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাইজিংবিডিকে বলেন, হকারদের স্থানীয় প্রভাবশালীরা শেল্টার দেয়। উচ্ছেদ শুরু হলে হকারদের সরে যেতে বলেন। উচ্ছেদ হলে আবার দোকান নিয়ে বসতে বলেন। এ কারণে ডিএসসিসি ফুটপাত থেকে হকার মুক্ত করতে পারছে না।

ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুন সরদার রাইজিংবিডিকে বলেন, হকাররা অভিযানের খবর জানতে পেরে তারা সটকে পড়েন। দিনের বেলায় জনসাধারণের চলাচলের জন্য ফুটপাত হকারমুক্ত রাখতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। যেসব হকার দিনের বেলায় ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।

হকারদের পুনর্বাসনের বিষয় নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি নগর ভবনের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও হকার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ১৫ জানুয়ারি থেকে কর্মদিবসে গুলিস্তান, মতিঝিল ও এর আশপাশ এলাকার ফুটপাতে দিনের বেলা কোনো হকার বসতে দেওয়া হবে না। তবে অফিস শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে তারা গুলিস্তান-মতিঝিল এলাকায় বসতে পারবে।  

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ মার্চ ২০১৭/আসাদ/হাসান/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়