ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

দূরপাল্লার বাসে শিডিউল বিপর্যয়, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৯, ২৮ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
দূরপাল্লার বাসে শিডিউল বিপর্যয়, দুর্ভোগে যাত্রীরা

করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১ জুন থেকে ফের চালু হয়েছে গণপরিবহণ ও দূরপাল্লার বাস। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ—দূরপাল্লার বাসে প্রায়ই শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। এতে একদিকে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগেও। এসব অভিযোগ স্বীকার করে বাস মালিকরা বলছেন, করোনার কারণে সরকারের বেঁধে দেওয়া সংখ্যার যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাস ছাড়া যাচ্ছে না শিডিউল অনুযায়ী।

রোববার (২৮ জুন) রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলাবাগান ও আরামবাগের বাস কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ে দূরপাল্লার বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে না। শিডিউল অনুযায়ী কোনো বাসেই ১০-১২ জনের বেশি যাত্রী মিলছে না। ফলে কাউন্টার থেকেও সময়মতো বাস না ছেড়ে যাত্রীদের পরবর্তী বাসে পাঠানো হচ্ছে।
বাসযাত্রা নিয়ে কথা হয় এসএম ইমরান হোসেন নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি ঢাকা থেকে বরিশাল যাবেন। রাইজিং বিডিকে এই যাত্রী বলেন, ‘‘আজ রাতেই বরিশাল যাওয়ার জন্য ‘সাকুরা এসি পরিবহন’-এর একটি বাসের টিকিট কেটেছি ৬০ শতাংশ ভাড়া বেশি দিয়ে। কিন্তু কিছুক্ষণ আগে আমাকে কল দিয়ে জানানো হলো—যাত্রী কম। তাই বাস ছাড়বে না। আগামীকাল সকালে যেতে হবে।’ তিনি বলেন,  ‘এভাবে হঠাৎ করেই শিডিউল পরিবর্তন করা ঠিক নয়। এমন পরিস্থিতি ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়।’’    

এসব অভিযোগ বিষয়ে সাকুরা পরিবহনের (এসি বাস) গাবতলী কাউন্টারের ম্যানেজার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মেনেও ৪০ সিটের বাসে ২০ জন যাত্রী জায়গায় ১২ জনের বেশি হচ্ছে না। এ কারণে শিডিউল অনুযায়ী বাস ছাড়া যাচ্ছে না।’  

কথা হয় হানিফ পরিবহনের চালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘করোনার ভয়ে জরুরি প্রয়োজন না হলেও কেউ কোথাও যেতে চান না। আমরা যতই বাসে জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করি না কেন, মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না। তাই যাত্রী পাওয়া যায় না।’  

এক প্রশ্নে জবাবে ‘ঢাকা টু কক্সবাজার-টেকনাফ’ রুটের ‘সেন্ট মার্টিন পরিবহন’ মালিক মোহাম্মদ হূমায়ুন কবির বলেন, ‘করোনার কারণে এখন যাত্রী নেই। প্রায় বাসই খালি যেতে হচ্ছে। এভাবে লোকসান দিয়ে তো বাস চালানো যাবে না। তাই প্রত্যেক রুটেই বাসের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি।’

শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হূমায়ুন কবির বলেন, ‘যাত্রী কম হওয়ায় কোনো কোনো বাসের সময় পরিবর্তন করা হচ্ছে। আমরা যাত্রীদের জানিয়েও দিচ্ছি।’

জানতে চাইলে এনা পরিবহনের মহাখালী বাস টার্মিনালের কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, ‘এখন যাত্রী নেই বললেই চলে। আগে যেখানে প্রতি ঘণ্টায় আমাদের বাস চলাচল করতো, সেখানে এখন যাত্রীর অভাবে বাস কম নামানো হচ্ছে। মাঝে-মাঝে যাত্রী না থাকায় সময়মতো বাসও ছাড়া যাচ্ছে না।’  

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেও করোনার ভয়ে এখন যাত্রী কম। এই কারণে রাস্তায় বাসও কিছুটা কমিয়ে দিয়েছি। যাত্রী না পেলে লোকসান দিয়ে তো আর কেউ বাস চালাবেন না। এটাই স্বাভাবিক।’

শিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘যাত্রী কম। তাই মাঝে মাঝে শিডিউল বিপর্যয় হতে পারে। তবে, এসব ক্ষেত্রে কাউন্টারের কর্মীদের বলে দিয়েছি, তারা যেন যাত্রীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে দেন।’ প্রয়োজনে যাত্রীদের পরবর্তী বাসে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় বলেও তিনি জানান।


ঢাকা/ হাসিবুল/এনই

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ