ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

নদী ভাঙনে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার উদ্যোগ

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নদী ভাঙনে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার উদ্যোগ

হাসিবুল ইসলাম মিথুন: কুশিয়ারা নদীর তীরে অবস্থিত বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্ট, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, কৃষি জমি ও সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।

প্রস্তাবিত ‘হবিগঞ্জ জেলার বিবিয়ানা-৩, বিবিয়ানা দক্ষিণ ও সামিট বিবিয়ানা-২ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সম্মুখ ভাগে অবস্থিত কুশিয়ারা নদীর উভয় তীরের ভাঙন রোধ’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১৮ কোটি টাকা। যার পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে করা হবে বলে প্রস্তাবিত প্রকল্পে বলা হয়েছে।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটায় পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য মোঃ জাকির হোসেন আকন্দের সভাপতিত্বে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে।  সে সভায় প্রকল্পটির নানা দিক মূল্যায়ন করে ছাড়পত্র বা নতুন করে নির্দেশনা দেয়া হতে পারে। পরে প্রকল্পটি পরিকল্পনামন্ত্রীর দপ্তরে পাঠালে মন্ত্রী একনেক সভায় উপস্থাপন করবেন।  সবকিছু ঠিক থাকলে প্রকল্প অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে, এই প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ২০১৯-২০ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দহীন অনুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না থাকলেও প্রকল্পটি অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন।

প্রকল্পটির এলাকা সম্পর্কে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, প্রকল্পের কাজ হবে সিলেট জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, বানিয়াচং, লাখাই ও মাধবপুর উপজেলায়।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে আরো জানা যায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্টের কার্যক্রম সচল থাকবে, নদীর গতিপথ পরিবর্তন প্রতিরোধ করা, সামাজিক নিরাপত্তাসহ এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন অব্যহত রাখা এবং পরিবেশের বিরূপ প্রভাব হতে প্রকল্প এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম গুলো হচ্ছে, নদীর তীর রক্ষা ৭ দশমিক ৪ কিলোমিটার, নদী ড্রেজিং ১৭৬ কিলোমিটার (১৪৩ দশমিক ৫৪ লাখ ঘনমিটার), ওয়াকওয়ে নির্মাণ ২ দশমিক ৬ কিলোমিটার।

প্রকল্পটি সম্পর্কে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বরাক নদী ভারতের মনিপুরের পাহাড় হতে উৎপত্তি হয়ে সিলেট সীমান্তে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুইটি শাখার বিভক্ত হয়েছে।  কুশিয়ারা নদী সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে সর্বশেষ মেঘনা নদীতে মিশেছে।  বৃষ্টির মৌসুমে কুশিয়ারা নদীর পানি খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রায় ১০ মিটার বৃদ্ধি পায়।  বৃষ্টির মৌসুমে কুশিয়ারা নদীর প্রবল স্রোতে বিভিন্ন স্থাপনাসহ জনসাধারণের বসতবাড়ি ও ফসলী জমি, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে এবং ফসলী জমির পরিমাণ হ্রাসের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে কুশিয়ারা নদীর উভয় তীরে বাপাউবো কর্তৃক নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সম্পুর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  তাই প্রকল্পটির মাধ্যমে এগুলো বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের সুপারিশ হচ্ছে, এর মোট ব্যয় ৫১৮ কোটি টাকা যা সম্পুর্ণ সরকারি অর্থায়নে করা হবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছে।  যেহেতু প্রকল্পটি এমটিবিএফ বহির্ভূত তাই প্রকল্পের অর্থায়ন কীভাবে হবে সে বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করতে পারে।  এছাড়া বাস্তবায়নের মেয়াদকাল যেটা ধরা হয়েছে তা বাড়িয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত করা যেতে পারে।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯/হাসিবুল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়