ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

নিখিলের মনে অনেক কষ্ট

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিখিলের মনে অনেক কষ্ট

নিখিল চন্দ্র পাল হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার জগন্নাথপুরের মৃত রজনী মোহন পালের ছেলে। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আছে তার গর্ব করার মতো যুদ্ধের গল্প।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের ৪৮ বছরেও পাওয়া না পাওয়ার আক্ষেপে তার মনে জমা হয়েছে অনেক কষ্ট। একান্ত আলাপে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে জীবনের নানা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সে সব কষ্টের কথাও জানালেন নিখিল।

একাত্তরের এপ্রিল মাসে শায়েস্তাগঞ্জ শহরে পাকসেনা এলে তিনি পরিবার নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। পায়ে হেঁটে ভারতের খোয়াই এলাকার একটি স্কুলে গিয়ে অবস্থান নেন। সেখান থেকে অমর কলোনিতে যান। পরে তাকে ও তার সঙ্গীদের পাঠানো হয় অমপিনগর ট্রেনিং সেন্টারে। সেখানে তিনি এক মাস ১০দিন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বাঘাই ক্যাম্পে এসে গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন।

পরে ৩নং সেক্টর প্রধান মেজর কেএম শফি উল্লাহ’র নেতৃত্বে সাব-সেক্টরের ক্যাপ্টেন এজাজ আহমেদ চৌধুরী ও কমান্ডার সৈয়দ জাহিদুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় চুনারুঘাটের রাণীগাঁও, সাটিয়াজুরী, নন্দনপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এতে পাকিস্তানিরা পালাতে বাধ্য হয়। জয় নিয়ে ৬ ডিসেম্বর শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে এসে অস্ত্র জমা দিয়ে বীরের ন্যায় বাড়ি ফিরেন।

জীবিকার জন্য শুরু করেন কৃষি কাজ। সেই থেকে কৃষি কাজ করে পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কয়েক বছর হলো অসুস্থ হয়ে পড়ায় কৃষি কাজ করতে পারছেন না। সেই থেকে ভাঙ্গা ঘরে ঘুমিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাকে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতার উপর নির্ভর করেই চলছে তার বর্তমান দিনগুলো।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ভাতা ছাড়া তেমন কিছু পাইনি। বসবাসের ঘরটাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। মেরামত করার টাকা নেই। এখানে ভাতার টাকায় তার পরিবারের চলা কঠিন।’

তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে গিয়ে জীবন বাজি রেখে লড়াই করে জয়ী হয়েছি। স্বাধীন দেশ পেয়েছি। বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যেতে দেখে ভাল লাগছে।’

তার সবচেয়ে বড় আক্ষেপ, তার চার সন্তানের জন্য তিনি তেমন কিছু রেখে যেতে পারছেন না। এজন্য তার মনে অনেক কষ্ট। সরকারের কাছে তার চাওয়া- এককালীন আর্থিক সহযোগীতা ও একটি পাকা ভবন। পরিবারের একটু নিশ্চয়তা দেখে যেতে চান তিনি।

 

হবিগঞ্জ/মামুন চৌধুরী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়