ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

নিজের গানে নিজেই সুর করেন জাহাঙ্গীর

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ১৬ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিজের গানে নিজেই সুর করেন জাহাঙ্গীর

আরিফ সাওন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কয়েকটি গান লিখলেন এম এম জাহাঙ্গীর। লেখার পর ভাবলেন, গানগুলো যদি ভালো কোনো শিল্পী দিয়ে গাওয়ানো যেতো!

কিন্তু বড় শিল্পীদের কোথায় পাবেন! তাই গেলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থানীয় এক শিল্পীর কাছে; দেখালেন নিজের লেখা গানগুলো। আবদার করলেন, গান গুলো তাকে গেয়ে দেওয়ার। কিন্তু সেই শিল্পী আবদার রাখতে জুড়ে দিলেন শর্ত।

শর্ত হচ্ছে, প্রতিটি গানের জন্য তাকে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। শুনে কারারক্ষী জাহাঙ্গীরের মাথায় হাত। বুঝলেন তাকে দিয়ে তার গান গাওয়ানো হবে না। তারপর সেই শিল্পী তার রেট কমিয়ে প্রতি গানে ৫ হাজার টাকা করে চাইলেন।

কিন্তু জাহাঙ্গীর তাতে রাজি হলেন না। মনস্থির করলেন, নিজের লেখা গান নিজেই গাইবেন। সেই থেকেই ‍শুরু করলেন গান গাওয়া। তার আগে গান তিনি কোনো দিন গাননি।

গত এক বছরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ১৩৭ টি গান গেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ২২ টি এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আরো অন্তত ৮০ টি গান গেয়েছেন। তার লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এক লাখ গান গাওয়া।

গান গেয়ে ফেসবুকে আপলোড করে অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। দিন দিন বাড়ছে তার জনপ্রিয়তা। বাস্তবধর্মী গান করায় অনেকেই তার ভক্ত হয়ে গেছেন।

জাহাঙ্গীর কোনো মঞ্চে উঠে বা কোন স্টুডিওতে গিয়ে গান করেন না; তিনি গান করেন গাড়িতে বসে, যে গাড়িটির চালক তিনি। গাড়িটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেল সুপারের আর কারারক্ষী জাহাঙ্গীর এই গাড়ির চালক।

সমসাময়িক কোনো ঘটনা যখন তার মনের উপর প্রভাব ফেলে তখন তিনি সেই ঘটনা নিয়ে লিখেন গান। লেখা শেষে নিজেই সুর করেন। এরপর গাওয়া ও রেকর্ডিংয়ের পালা। একটি ছোট ক্লিপবোর্ড আছে। লেখা গানের কাগজটি তাতে আটকে নিয়ে সেটি স্টিয়ারিংয়ের ওপরে রাখেন। মোবাইল ফোনসেটে ভিডিও ক্যামেরা অন করে ফ্রেম ঠিক করে রাখেন সামনে। নিজের ইউনিফর্ম (কারারক্ষীদের পোশাক) পড়ে নেন, হাতে নেন তার নিজস্ব বাদ্য যন্ত্র- এয়ার ফ্রেশনারের একটি খালি ক্যান। এরপর রেকর্ড চালু ‍করে শুরু করেন গান। গাওয়া শেষে ফেসবুকে আপলোড করে দেন।

জাহাঙ্গীর বলেন, ‘একটা গান লেখা, সুর দেয়া থেকে শুরু করে গেয়ে ফেসবুকে আপলেড করতে তার দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লাগে।

জাহাঙ্গীরের বাড়ি নওগাঁ জেলা সদরের তিলেকপুর গ্রামে। বাবা আব্দুল বারি একজন মুক্তিযোদ্ধা। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীর মেজো। তার বয়স এখন ৩০ বছর। লেখাপড়া করেছেন আলিম পর্যন্ত। এরপর চাকরিতে যোগ দেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৮ বছর বয়সী এক মেয়ের বাবা।

তিনি বলেন, ‘চাকরিটা খুব দরকার ছিলো, তাই এই চাকরিতে যোগ দেওয়া। সে কারণে পরে আর লেখাপড়া করা হয় ওঠেনি।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় বেশি এগোতে পারেননি, তাতে কি? স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান তিনি।

(১৭ আগস্ট, শনিবার পড়ুন এম এম জাহাঙ্গীরের তিন পর্বের সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব)


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ আগস্ট ২০১৯/সাওন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়