ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রবাসীদের উন্নত সেবায় দূতাবাস অ্যাপ চালু

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪০, ১১ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রবাসীদের উন্নত সেবায় দূতাবাস অ্যাপ চালু

প্রবাসীদের দোরগোড়ায় কনস্যুলার ও কল্যাণ সেবা পৌঁছে দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চালু করেছে মোবাইল অ্যাপ। এর নাম ‘দূতাবাস’।

কনস্যুলার ও কল্যাণ সেবা গ্রহণের পাশাপাশি এই অ্যাপ দিয়ে দালালদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া যাবে। ব্যবস্থা নেয়া যাবে মানবপাচার রোধে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দাবি অনুযায়ী, সরকার অন্য যেকোনো অ্যাপের থেকে এটি অনেক বেশি বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং ভেরাইটিজ।

অ্যাপটি চালু হলেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। শুক্রবার অ্যাপটি ব্যবহারের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সিউলে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। এখন থেকে প্রবাসীদের পাশাপাশি যে কেউ এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) ও দূতাবাস মকিয়া বেগম জানান, পরীক্ষামূলকভাবে অ্যাপটির কাজ শুরু হয়েছে কয়েক মাস আগেই। অনানুষ্ঠানিকভাবে দূতাবাস অ্যাপটি সেবা দেওয়ার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এই অ্যাপের মাধ্যমে এখন থেকে সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে কনস্যুলার ও কল্যাণ সেবা অর্থ্যাৎ সব ধরনের সত্যায়ন গ্রহণ করা যাবে।

এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এই ‘দূতাবাস অ্যাপ’ তৈরি করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের শিক্ষা সনদ, জন্ম ও মৃত্যু সনদ প্রত্যয়নসহ ৩৪ ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। তবে সিস্টেম লস ও দুর্নীতির কারণে প্রবাসীদের অনেক সময় ভোগান্তি পোহাতে হয়। অবস্থা পাল্টে দিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এসব সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়।

এখান থেকে স্ক্যান করেও অ্যাপসটি ইনস্টল করা যাবে

 

অ্যাপে কী কী সেবা পাওয়া যাবে

বর্তমান পদ্ধতিতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সেবা নিতে হয়। অর্থাৎ দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিদেশে সংশ্লিষ্ট মিশনে হাজির হয়ে সেবা গ্রহণ করতে হয়। যেমন- দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকা একজন বাংলাদেশি তার কোনো ডকুমেন্ট সত্যায়িত করতে চাইলে, সে দেশটির যে প্রান্তেই থাকুক তাকে সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে হবে। সেবা পাওয়ার জন্য দূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় ফরম সংগ্রহ করে নির্ধারিত ফি ব্যাংকে জমা দিতে হবে। পরে ওই স্লিপটি দূতাবাসে জমা দিতে হবে। সেবা সম্পন্ন হলে আবারও দূতাবাসে গিয়ে কাগজ সংগ্রহ করতে হবে।

এক কথায় বলা যায়, সেবা নিতে একজন ব্যক্তিকে দুই বা তারও বেশি সময় দূতাবাসে আসা-যাওয়া করতে হয়। যা প্রবাসীদের জন্য অনেক সময়ই সম্ভব হয়ে ওঠে না। এসব কারণে প্রায়ই দালালদের সহযোগিতা নিতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন সেবাগ্রহীতারা।

কিন্তু অ্যাপের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে সশরীরে হাজির হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, গোটা বিষয়টি ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে। সেবাগ্রহণকারী ব্যক্তিকে প্রথমে দূতাবাস অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। পরে ৩৪টি সেবার মধ্যে যে সেবাটি পেতে দরকার, সেই মেন্যুতে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের (ডকুমেন্টস) ছবি তুলে অ্যাপে আপলোড করতে হবে। কেউ যদি শিক্ষা সনদ সত্যায়িত করতে চান, তবে তাকে শিক্ষা সনদ, পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি অ্যাপে আপলোড করতে হবে। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজস্ব তত্ত্বাবধানে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সত্যায়িত সনদের কপি সেবাগ্রহীতার অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবে। এরপর ওই কপিটি প্রিন্ট করে নিয়ে প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা যাবে।

মানবপাচার রোধে অ্যাপ বিশেষ সুবিধা:

দূতাবাস অ্যাপের ৩৪টি সেবার অন্যতম হলো ডিসট্রেস কল সুবিধা এবং মানবপাচার প্রতিরোধ সেবা। এ দুটি সেবার মাধ্যমে কোনো অভিবাসী বিপদে পড়লে অ্যাপের নির্দিষ্ট মেন্যুতে গিয়ে ডিসট্রেস কল দিলে সেটি কাছের দূতাবাসে পৌঁছে যাবে। দূতাবাসের কনস্যুলার বা এ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা সঙ্গে সঙ্গে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির সহায়তায় উদ্যোগী হবেন।

এছাড়া, মানবপাচার বিষয়ে বা কেউ এ অপরাধের শিকার হলে, অ্যাপের মাধ্যমে রিপোর্ট করে দূতাবাস বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তা পেতে পারেন।


ঢাকা/হাসান/সাইফ/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়