ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘বাজেট গতানুগতিক’

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১০, ৭ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বাজেট গতানুগতিক’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে গতানুগতিক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ।

তিনি বলেন, ‘এবারের বাজেটকে শ্রেষ্ঠতম বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। আবার কেউ কেউ এই বাজেটকে নিকৃষ্টতম বাজেট বলেছেন, সেটা আবার বেশি বলেছেন। আমি বলব, এটি একটি গতানুগতিক বাজেট।’

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের বাজেটোত্তর মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এম এম আকাশ বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিবিদদের মধ্যেও ভাগ রয়েছে। এদের মধ্যে কেউ বলছেন এটি বড় বাজেট নয়। কেউ বলছেন এটি অবাস্তব বাজেট। খালেদা জিয়ার প্রতিনিধিরা বলছেন এটি ফাঁপানো বাজেট। যা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে মুহিত সাহেবের বক্তব্য হলো- বাজেট তো বড় করতেই হবে। কেননা, বড় বাজেট হলে তা বাস্তবায়নে চাপ থাকবে তাই বেশি বাস্তবায়ন হবে।’

এই অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, ‘মূল বিষয় হচ্ছে এই বাজেট বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা সরকারের আছে কি না। তবে বাজেট বাস্তবায়ন দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে। একটি নির্ভর করবে টাকা তোলার ক্ষমতার ওপর। আরেকটি নির্ভর করবে টাকা ব্যয়ের ক্ষমতার ওপর। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, টাকা ব্যয়ের ক্ষমতাই সরকারের নেই। আমরা দেখেছি, চলতি বাজেটই মে মাস পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।’

বাজেটে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজেটে কোন পণ্যের দাম বাড়বে আর কোন পণ্যের দাম কমবে তা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কেননা, অনেক রকম ট্যাক্স এটার মধ্যে আছে। একবার কাস্টমস ডিউটি বসছে। একবার সেলস ট্যাক্স বসছে। আবার ভ্যাট বসছে। আবার আবগারি শুল্ক বসছে। কোনো কোনো পণ্যে দুবার ভ্যাট বসছে আবার কোনো কোনো পণ্যে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। কোনো পণ্যে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে এটার প্রভাব কী হবে তা ঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।’

দৈনিক প্রথম আলোর বিজনেস এডিটর শওকত হোসেন মাসুম বলেন, ‘বাজেটে অপ্রয়োজনীয় কথা বেশি হয়। এসব অপ্রয়োজনীয় কথা না বলে সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরা উচিত। তাই বাজেট বক্তৃতায় একটা সংস্কার আনা দরকার।’

তিনি বলেন, এবারের বাজেটের মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ভ্যাট আইন। তাই জুলাই থেকে সাংবাদিকদের বড় কাজ হবে ভ্যাট আইনটি কীভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেদিকে নজর রাখা।’

সভায় ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘বাজেটে বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কি না, সেটা দেখতে হবে। কেননা, বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার না হলে এটা এক ধরনের প্রতারণা। তাই বাজেট প্রক্রিয়াকে আরো বেশি গণতান্ত্রিক করতে হবে। এর সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।’

মতবিনিময় সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক এ আর আমান। তিনি বলেন, ‘বাজেটে নারীর কল্যাণে সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ভ্যাট সংগ্রহ প্রক্রিয়া মোটেই অনুকূল নয়। ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপ অনৈতিক। বাজেটে করপোরেট কর আদায় ও সম্পদ কর আদায়ে সরকারের মনোযোগ খুবই কম।’

গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সহসভাপ্রধান আসগর আলী সাবরীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জুন ২০১৭/হাসিবুল/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়