ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বিশ্ব অর্থনীতির পতন ঘটাতে পারে যে গ্রহাণু

রাসেল কবির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২২ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিশ্ব অর্থনীতির পতন ঘটাতে পারে যে গ্রহাণু

রাসেল কবির : মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা একটি মূল্যবান গ্রহাণু ‘১৬ সাইকি’ অভিযানের পরিকল্পনা করছে, যেটা পৃথিবী থেকে ২৩০ মিলিয়ন মাইল দূরে হতে পারে।

এটি প্রায় ২০০ কিমি ব্যাস আর প্রায় পুরোটাই লোহা ও নিকেলসহ বহুমূল্যবান ধাতু (সোনা, প্লাটিনাম ইত্যাদি) দিয়ে গঠিত বৃহদায়তন গ্রহাণু।

নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গ্রহাণুর শুধু লোহার মূল্যই হবে ১০,০০০ কোয়াড্রিলিয়ন ইউএস ডলার। গ্রহাণুটির উপাদানের মূল্যমান ৭৩.৭ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার, যা বিশ্বঅর্থনীতি বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। সৌরজগতে এ ধরনের মূল্যবান উপাদান দিয়ে গঠিত একমাত্র গ্রহাণু হচ্ছে, ১৬ সাইকি।

নাসার মিশনের প্রধান বিজ্ঞানী ড. এলকিনস টেনটন এর মতে, এই গ্রহাণুর ধাতব উপাদানের যা মূল্যমান তাতে এই গ্রহাণুর বড় খন্ড বা গ্রহাণুটিকে পৃথিবীতে আনয়ন পুরোপুরি বিশ্বঅর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার জন্য যথেষ্ট। কেননা বর্তমানে পৃথিবীর যেসব দেশ এবং প্রতিষ্ঠান, গ্রহাণু সাইকির মধ্যে বিদ্যমান লোহা-নিকেলসহ অন্যান্য ধাতব উপাদান উত্তোলন ও বিপণন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সেসব দেশ এবং প্রতিষ্ঠানের এসব ব্যবসায়ীপণ্য নিম্নমুখী দরের কারণে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। এতে সমগ্র বিশ্বঅর্থনীতির পতন হতে পারে। সৌভাগ্যবশত, নাসার পরিকল্পনা আপাতত সাইকি অনুসন্ধান, একে পৃথিবীতে আনার কোনো পরিকল্পনা নেই।

এ ব্যাপারে ড. এলকিনস টেনটন বলেন, ‘এমনকি যদি আমরা সাইকির একটি বড় ধাতব টুকরা দখল করে এটাকে পৃথিবীতে আনতে সক্ষম হই... আপনি কি করবেন? নিশ্চয়ই ওসব ধাতব ব্যবসা মজুদদারিতে পরিণত হবে। আর যদি বলা হয় এসব ধাতু পৃথিবীতে এনে মানব কল্যাণে ব্যয় হবে তাহলে সেটা উম্মাদ অনুমান হবে।’

নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে গ্রহাণু ১৬ সাইকি অধ্যয়ন করার মাধ্যমে এর গাঠনিক কাঠামোগত উপাদান সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে পেরেছে। ১৬ সাইকিকে ধরা হয় ধাতুর তৈরি গ্রহাণুর ভেতর সৌরজগতের সবচেয়ে বড় রহস্যময়। এই ‘ধাতব বিশ্ব’ সূর্যের জন্মের কাছাকাছি সময়ে গঠিত হয় বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।

১৬ সাইকি গ্রহাণু, মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যবর্তী স্থানে বৃহৎ গ্রহাণু বেল্টের মধ্যে অবস্থিত। এটি ১৭ মার্চ ১৮৫২ সালে আবিষ্কৃত হয়। ধাতব গ্রহ হলেও, এতে উদ্বায়ী পদার্থ যেমন পানি বা হাইড্রোক্সিল যৌগের অস্তিত্বও রয়েছে বলে ইনফ্রারেড টেলিস্কোপের মাধ্যমে ২০১৬ সালে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

নাসা পরিকল্পনা নিয়েছে, ধাতব বিশ্ব ‘১৬ সাইকি’ অভিযানে ২০২৩ সালের অক্টোবরে নভোযান পাঠাবে, যা ২০২৫ সালে মঙ্গলগ্রহ হয়ে ২০৩০ সালে সাইকিতে পৌঁছাবে। যা হোক, নাসার ১৬ সাইকি অনুসন্ধান অভিযান কি মানব সভ্যতার কল্যান বয়ে আনবে নাকি বিশ্ব অর্থনীতির বিপর্যয় ডেকে আনবে? এ প্রশ্নের উত্তর কেবল সময় বলতে পারবে। আমরা সে পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকি।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ জানুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়