ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ভোট বর্জন করে কালো ব্যাজ ধারণের সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভোট বর্জন করে কালো ব্যাজ ধারণের সিদ্ধান্ত

রংপুর সদর আসনের উপ-নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকবেন ৯৮ হাজার হিন্দু ভোটার। ওই দিন কালো ব্যাজ ধারণ করবেন তারা। দুর্গাপূজার সময়ে ভোট গ্রহণ ও পূজামণ্ডপে ভোটকেন্দ্র করার প্রতিবাদে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

এবার উপ-নির্বাচনে দুই ধরনের পুলিশ দেখতে পাবেন এই আসনের ভোটাররা। এই আসনটি গঠিত হয়েছে সিটি করপোরেশনের ৩৩ ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি এবং  সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে। সদরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে জেলা পুলিশ, সিটি করপোরেশনে দায়িত্ব পালন করবে মেট্রোপলিটন পুলিশ। জেলা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশের সমন্বয় না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন ভোটাররা। কারণ, নির্বাচনী এলাকা একটি হলেও পুলিশের প্রশাসনিক কাঠামো দুই প্রকার। ফলে অপরাধীরা খুব সহজেই অপরাধ করে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে চলে যেতে পারবে।

১৭৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। তবে কতটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এখন পর্যন্ত তা চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। ফলে কোনো কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অধিক নজরদারি করবে তা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা থেকেই গেল।

এদিকে, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনে কমপক্ষে ১৫টি ভোটকেন্দ্রে হিন্দুদের দুর্গাপূজা হবে। স্কুলের ওই কেন্দ্রগুলোতে পূজা হলে ভোটগ্রহণ যেমন বাধাগ্রস্ত হবে তেমনই পূজার অনুষ্ঠানও বাধাগ্রস্ত হবে। ওই দিন দুর্গাপূজার ষষ্ঠি। তারা ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছেড়ে ভোট দিতে যেতে পারবেন না। মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ভোট পেছানোর পক্ষে নয়। তাই হিন্দুরা ভোট বর্জনের পাশাপাশি ওই দিন কালো ব্যাজ ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ধনজিত ঘোষ তাপস বলেন, আমরা ভোট গ্রহণের তারিখ পরিবর্তনের জন্য মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান, এমনকি অনশন করেছি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো- নির্বাচন কমিশন আমাদের বিষয়টি আমলে নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে ভোট বর্জন ও কালো ব্যাজ ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, মেট্রোপলিটন এলাকায় ৬৮ হাজার এবং সদরের পাঁচটি ইউনিয়নে ২০ হাজারের বেশি হিন্দু ভোটার রয়েছে। ভোটের দিন আমরা কেউ ভোটকেন্দ্র যেতে পারব না ধর্মীয় অনুভূতির কারণে।

মহানগর পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত ভৌমিক বলেন, ওই দিন আমরা ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখনো সময় আছে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বিবেচনা করে ভোটগ্রহণের তারিখ পরিবর্তন করার।

এদিকে, একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে দুই ধরনের পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে। সদরের মমিনপুর, হরিদেবপুর, চন্দনপাট,সদ্যপুস্করণি ও খলেয়া ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে জেলা পুলিশ। অপরদিকে সিটি করপোরেশন এলাকার ২৫টি ওয়ার্ডের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে মেট্রোপলিটন পুলিশ। নির্বাচনের দিন জেলা পুলিশ সিটি করপোশেন এলাকায় যেতে পারবে না। অপরদিকে মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিয়নগুলোতে যেতে পারবে না। অথচ নির্বাচনী আসন একটিই। নির্বাচনের দিন পুলিশ বাহিনীর পৃথক দুটি ইউনিটের যদি সমন্বয় না থাকে তা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে।

এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার আলতাফ হোসেন বলেন, সদর আসনে জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশ সমন্বয় করে কাজ করবে। কোথাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে দেয়া হবে না।

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম শাহতাব উদ্দিন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করার কাজ পুলিশ বিভাগের। তারা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করে বাড়তি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

নির্বাচনে তারিখ পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের বিষয়।

রংপুর সদর আসনে ভোট গ্রহণ হবে ৫ অক্টোবর। এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন এবং ২ লাখ ২০ হাজার ৭৬২ জন নারী ভোটার।


রংপুর/নজরুল মৃধা/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ