ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে

শেখ মো. রতন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০১, ৩ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে

মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা : জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। মুন্সীগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ৩৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন যাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার টঙ্গিবাড়ি উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিগাঁও বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন (৪০) শুক্রবারে মারা গেছেন। গত বুধবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আনোয়ার হোসেনকে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি হন।

ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি হওয়ায় এরই মাঝে মোট ৮ জনকে মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার হাসপাতালে পাঠিয়েছেন স্থানীয় চিকিৎসকরা।

এদিকে, মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালসহ তিনটি হাসপাতাল থেকে ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চত করে বলেন, বর্তমানে আমাদের হাতে থাকা ডেঙ্গু পরীক্ষার ডিভাইস দিয়ে (ডেঙ্গু স্পিরিং টেস্ট) ১৫০ জনকে পরীক্ষা করা যাবে। মুন্সীগঞ্জে এ পর্যন্ত ৫৬ জনকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় কারও ডেঙ্গু ধরা পড়েনি। জেলায় যারা ডেঙ্গু রোগী তারা ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন। মুন্সীগঞ্জে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়নি বলে জনিয়েছেন সিভিল সার্জন। তবে প্রয়োজনবোধে ডেঙ্গু স্পিরিং টেস্ট আরও সরবরাহ করা হবে।

শুক্রবার বন্ধের দিন থাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আসা রোগীদের ডেঙ্গু স্পিরিং টেস্টসহ অন্যান্য পরীক্ষা বাইরে থেকে করতে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, হাসপাতাল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কথা থাকলেও ময়লা আবর্জনা দেখা গেছে হাসপাতালের ভেতরেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ যাবতীয় ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে বলে রোগীদের অভিযোগ। এতে দরিদ্র রোগীরা হিমশিম খাচ্ছেন। শিশু থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে, ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী রোগীর সংখ্যাই বেশি।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. তোফাজ্জল হোসেন জানান, কিছু কিছু পরীক্ষা রোগীদের বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। বন্ধের দিনসহ অন্যান্য দিনে ডেঙ্গু সনাক্তকরণ করার জন্য যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালেই করা হচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের বেশির ভাগ আশপাশের এলাকা থেকে এসেছে। সাপ্লাই সীমিত হওয়ায় দরিদ্র ও ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি তাদেরকে ডেঙ্গু স্পিরিং টেস্ট করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার হাতিমারা থেকে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি এক ডেঙ্গু রোগী জানান, পাঁচ দিন ধরে তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি একজন মুদি দোকানী। ডেঙ্গু পরীক্ষা থেকে শুরু করে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং স্যালাইন, ওষুধ সবই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

দুর্গাবাড়ি থেকে থেকে আসা এক নারী রোগী জানান, তিনি আট দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাইরে থেকে ওষুধ, স্যালাইন কিনে এনেছেন। কিন্তু কোন ডাক্তার, নার্স এখনও (এ প্রতিবেদন লেখা পর্য়ন্ত) স্যালাইন পুশ করতে আসছেন না।

চরকেওয়ারের এক নারী তার শিশুপুত্রকে নিয়ে আজ সকালে হাসপাতালে এলে তার ঠাঁই মিলেছে হাসপাতালের বারান্দায়। তাকে বাইরে থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি পরীক্ষা না করে হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা করার জন্য অপেক্ষা করছেন।


রাইজিংবিডি/মুন্সীগঞ্জ/৩ আগস্ট ২০১৯/শেখ মোহাম্মদ রতন/বুলাকী/নবীন হোসেন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়