ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রংপুর ছাড়তে আ.লীগকে অনুরোধ করবে জাপা

নজরুল মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৪, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রংপুর ছাড়তে আ.লীগকে অনুরোধ করবে জাপা

রংপুর-৩ আসনে স্থানীয় প্রার্থী দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেন এরশাদের ভাতিজা শাহরিয়ার আসিফ ও তার সমর্থকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে কোন প্রার্থী না দেয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দু’একদিনের মধ্যে অনুরোধ করবে জাতীয় পার্টির হাইকমান্ড। জাপার কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

রংপুরে জাপার প্রয়াত চেয়ারম্যান এরশাদের শূন্য আসনটি জাতীয় পার্টির কাছে অস্তিত্বের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসনটি হাতছাড়া হলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে দলটি।

রংপুর-৩ সদর আসনের উপ-নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা জানান, জাপার প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের শূন্য আসনে জোটগত নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আওয়ামী লীগের কাছে জানানো হবে। এ আসনে আওয়ামী লীগকে প্রার্থী না দেয়ার জন্য অনুরোধ করবো আমরা। কারণ এটি দলের চেয়ারম্যানের আসন।

তিনি বলেন, আগে কয়েকটি নির্বাচন জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ ভাবে করেছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এই আসনে দীর্ঘদিন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন। তার অবর্তমানে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের অনুরোধ করবো। আশা করি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির অনুরোধ রাখবে এবং আমাদের সহায়তা করবে।

আগামী ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হবে। এরপর চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।

এদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন এরশাদের ভাতিজা সাবেক এমপি আসিফ শাহরিয়ার। শেষ পর্যন্ত আসিফ ভোটের মাঠে থাকলে জাপা প্রার্থীরা বেকায়দায় পড়তে পারেন বলে অনেকেই মনে করছেন।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান আশা প্রকাশ করে বলেন, রংপুর সদর আসনের সাথে আমাদের অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে। এটা দলের প্রধানের আসন ছিল। আমরা এখনও আশা করছি আসনটি আওয়ামী লীগ আমাদের ছেড়ে দিবে। কারণ আওয়ামী লীগের সাথে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক সুসম্পর্ক রয়েছে।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির আহমেদ, জেলা জাপার প্রেসেডিয়াম সদস্য শিল্পপতি ফখর উজ জামান জাহাঙ্গির, ও এরশাদের ভাগ্নি মেহেজেবুন নেছা টুম্পা।

বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। এই অবস্থায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ ভোট পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৯২৬টি। অপরদিকে বিএনপি জোটের প্রার্থী রিটা রহমান ভোট পেয়েছিলেন ৫৩ হাজার ৮৯টি। আসনটির মোট ভোটার ৪ লাখ ৪২ হাজার ১৪৯ জন। ভোটের সংখ্যাত্বত্তের হিসেবে বিএনপি জোটের ফলাফল খুব একটা খারাপ নয়। এবার আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে ভোটের হিসেব পাল্টে যাবে। তাই অনেকে মনে করছেন, এই আসনটি জাতীয় পার্টিকে ধরে রাখতে হলে যেভাবেই হোক আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করে জোটগত নির্বাচন করতে হবে। এটা করতে না পারলে জাপার ভরাডুবি হবার সম্ভবনা রয়েছে।

এদিকে এরই মাঝে আ’লীগ দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করেছে। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও প্রার্থীতা পাবার জন্য রংপুর থেকে প্রায় একডজন নেতা বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং হাই কমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তফসিল অনুযায়ী এ আসনের মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর, যাচাই-বাছাই ১১ সেপ্টেম্বর, মনোনয়ন প্রত্যাহার ১৬ সেপ্টেম্বর এবং ভোটগ্রহণ ৫ অক্টোবর।


রাইজিংবিডি/রংপুর/৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯/নজরুল মৃধা/নবীন হোসেন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়