ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রাজস্ব আদায় বাড়াতে বছরে তিনবার ‘আয়কর মেলা’

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ১৫ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
রাজস্ব আদায় বাড়াতে বছরে তিনবার ‘আয়কর মেলা’

করোনাভাইরাসের প্রভাব কমলে আয়কর থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে প্রতিবছর একবারের পরিবর্তে তিনবার আয়কর মেলা আয়োজনের চিন্তা করছে সরকার। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে এনবিআরের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫০ শতাংশ।

এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব কিনা- এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, করোনা পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে আগামী বছর এনবিআরকে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের টার্গেট দেওয়া হতো। কিন্তু তা কমিয়ে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। জুনের শেষ দিক থেকে সব ব্যবসা  প্রতিষ্ঠানে ‘ইএফডি’ (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস) বসানো শুরু হবে। এতে করে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া আর সম্ভব হবে না। একই সঙ্গে যারই টিআইএন রয়েছে তাকেই  ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হবে। তাহলেই আগামী অর্থবছর বাজেটে দেওয়া রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

ইতোমধ্যে তার প্রতিফলন ঘটেছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বাজেট বক্তৃতায়। অর্থমন্ত্রী তার ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতার ৮৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করছেন, বর্তমানে আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকার কারণে টিআইএনধারীর অর্ধেকেরও কম আয়কর রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। এরফলে অনেক টিআইএনধারীর ক্ষেত্রে করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও আয়কর রিটার্ন দাখিল না করে কর পরিশোধ এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই আমি যৌক্তিক কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া সব টিআইএন গ্রহণকারীর জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার বিধান প্রস্তাব করছি। অর্থমন্ত্রীর এ প্রস্তাবসহ বাজেট অনুমোদন হলে নতুন অর্থবছর থেকে আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা বাড়বে এবং কর ফাঁকির সুযোগ বন্ধ হবে।

এছাড়াও কর ফাঁকি রোধে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহযোগিতা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে খুব শিগগিরই আইএমএফের একটি টিমকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, কর ফাঁকি দেওয়া আমরা এক ধরনের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এতে ব্যাপক হারে কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে মূসক বা ভ্যাট, আমদানি ও রফতানি খাতে কর ফাঁকি বেশি হচ্ছে। আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিং মাধ্যমে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়া হয়। এ ফাঁকি কিভাবে রোধ করা যায় সে জন্য আইএমএফের সহায়তা চাওয়া হবে। তাদের বিশেষ টিমকে বাংলাদেশ আসার আমন্ত্রণ জানানো হবে। তারা কর ফাঁকি রোধে আমাদের কারিগরী সহায়তা দেবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে প্রতি বছর যে কর মওকুফ দেওয়া হয় তার মাধ্যমে কত টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয় তারও একটি হিসাব আমরা আইএমএফকে করতে বলব। এর আগেও আইএমএফের পক্ষ থেকে এক ধরনের একটি হিসাব করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, খুব শিগগিরই আইএমএফ’কে চিঠি দিয়ে তাদের সহযোগিতা চাওয়া হবে। আশা করছি তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কারিগরি সহায়তা পাওয়া যাবে। কারণ তারাও কর কাঠামো ঢেলে সাজানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে।



হাসনাত/এসএম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়