ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পর জেলে রাখা অযৌক্তিক: আপিল বিভাগ

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২২, ১৫ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পর জেলে রাখা অযৌক্তিক: আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দি এলাকার রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পাওয়ার পরও কারাগারে থাকা  আজমত আলীকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ যাবজ্জীবন দণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আজমত আলীর করা রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন।

সোমবার এ সংক্রান্ত আদেশের কপি প্রকাশিত হয়েছে।

আদেশে আদালত বলেছেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরও তাকে আবার জেলে পাঠানো অযৌক্তিক ও অপ্রত্যাশিত।  আদালত তাকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরও ৯ বছর কারাগারে’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, “রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন স্কুলশিক্ষক আজমত আলী। উচ্চ আদালতের রায়েও তিনি খালাস পান। কিন্তু মুক্তি পাওয়ার ১৩ বছর পর আবার সে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সেই থেকে ৯ বছর ধরে কারাগারে আছেন এই বৃদ্ধ।

সাজা মওকুফ হওয়া আসামি একই মামলায় আবার কেন গ্রেপ্তার হলেন, এ দায় কার? এমন প্রশ্নের জবাবে জামালপুর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নির্মল কান্তি ভদ্র বলেন, এর জন্য দায়ী আসামিপক্ষ। তাদের অবহেলার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। মুক্তির বিষয়টি আগেই তাদের অবহিত করার দরকার ছিল। কিন্তু তারা সেটা করেনি।

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দি এলাকার পাখিমারা গ্রামের ইজ্জত উল্ল্যা সর্দারের ছেলে আজমত আলী। টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঘোড়ামারা এলাকার ভেঙ্গুলা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালের ১ এপ্রিল জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম নিহত হন। এই ঘটনায় আজমত আলীকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। এ মামলায় ১৯৮৯ সালের ৮ মার্চ জামালপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। বিচারিক আদালতের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আজমত আলী। একই সময় তিনি রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার জন্যও আবেদন করেন। আপিল বহাল থাকার সময় রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় ১৯৯৬ সালের ২১ আগস্ট জামালপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। আবার ২০০৫ সালের ২ মার্চ হাইকোর্টের রায়েও তিনি খালাস পান।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আসামিকে (আজমত আলী) নিম্ন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। পরের বছর ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে আজমতকে গ্রেপ্তার করে নিম্ন আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। ২০১০ সালের ১১ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে আসা রায়ে হাইকোর্টের রায় (খালাস) ও আদেশ রদ করে নিম্ন আদালতের রায় (যাবজ্জীবন) ও আদেশ বহাল রাখা হয়।

আজমতের আইনজীবী জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, আজমত আলী মুক্তির পর ওই লিভ টু আপিলের বিষয়ে আর খোঁজখবর রাখেননি। ফলে বাদীপক্ষ রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টি জানায়নি। অন্য কেউই আর রাষ্ট্রপতির আদেশের বিষয়টি উল্লেখ করেনি।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জুলাই ২০১৯/মেহেদী/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়