ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সাংগ্রাই উৎসবে রঙিন বান্দরবান

বাসু দাস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪২, ১৩ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাংগ্রাই উৎসবে রঙিন বান্দরবান

বান্দরবান প্রতিনিধি : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বর্ণিল শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে মারমা সম্প্রদায়ের পাঁচদিনের বর্ষবরণ উৎসব সাংগ্রাই শুরু হয়েছে।

এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের আয়োজনে বান্দরবান শহরের রাজারমাঠ থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। পরে সেটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজার মাঠে শেষ হয়।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে শোভাযাত্রায় অংশ নেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। আরও উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ণিবান চাকমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হারুন অর রশীদ, সিভিল সার্জন উদয় শংকর চাকমা, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ক্য সা প্রু মার্মা প্রমুখ।

মারমা, ত্রিপুরা, চাকমা, বম, লুসাই, চাক, খুমীসহ ১২টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী তাদের ঐতিহ্য অনুসারে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

বান্দরবানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মারমা, রাঙ্গামাটিতে চাকমা ও খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসবাস। চাকমা সম্প্রদায় এই উৎসবকে বিঝু, মারমারা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরারা বৈসু বা বৈসুক বলে। ত্রিপুরাদের বৈসুর ‘বৈ’, মারমাদের সাংগ্রাইয়ের ‘সা’ এবং চাকমাদের বিঝুর ‘বি’ থেকে ‘বৈসাবি’ শব্দটি সৃষ্টি। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে নববর্ষকে বরণ করে পাহাড়িরা। পাহাড়ের দূর্গম এলাকায়ও এই উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে।

মারমাদের জলকেলি উৎসব পাহাড়ি-বাঙালির মিলন মেলায় পরিণত হয়। দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে আসে পর্যটকরা। শহরের রাজবাড়ীর মাঠে জলকেলি উৎসবে যোগ দিয়ে বিকেল থেকে দলে দলে মারমা তরুণ-তরুণীরা নির্ধারিত মঞ্চে অবস্থান করেন। এ সময় চারিদিকে মারমা সঙ্গীতের মূর্ছনা ছড়িয়ে পড়ে।

সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, ১৪ এপ্রিল দুপুরে উজানী পাড়ার পার্শ্ববর্তী সাঙ্গুনদীতে বৌদ্ধ মূর্তিস্নান। ১৫ ও ১৬ এপ্রিল পুরাতন রাজার মাঠে মারমা তরুণ-তরুণীরা জলকেলিতে মেতে উঠবে, সন্ধ্যায় তারা আনন্দে মেতে উঠবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে। ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত রয়েছে মন্দিরে মন্দিরে ধর্ম দেশনা শ্রবণ, বিশেষ প্রার্থনাসহ ছোয়াইং দান অনুষ্ঠান।

সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কো কো চিং বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এ উৎসবে মেতে উঠেছে আদিবাসীরা।

বর্ষবরণ উৎসবকে ঘিরে তিন পার্বত্য জেলায় শুরু হয়েছে আনন্দের বন্যা। দেশের অন্যতম পর্যটন শহর বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায় পুরাতন বর্ষকে বিদায় ও নবর্বষকে স্বাগত জানিয়ে উৎসব উদযাপন করে। আর এ উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ে পর্যটকদের আগমন বাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বুধবার রাতে তংচঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে জেলা শহরের বালাঘাটায় বিষু উৎসব উদযাপন করা হয়। এ সময় তংচঙ্গ্যা নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ মেতে ওঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও তাদের ঐতিহ্যবাহী ঘিলাখেলা প্রতিযোগিতায়।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিক উল্লাহ জানান, বর্ষবরণের উৎসবকে ঘিরে উৎসবস্থলে কঠোর নিরাপত্তার নেওয়া হয়েছে।



রাইজিংবিডি/বান্দরবান/১৩ এপ্রিল ২০১৭/এস বাসু দাশ/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ