ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সশস্ত্র ১০ দেহরক্ষীসহ চলাফেরা করতেন সেলিম প্রধান

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১১, ১ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 সশস্ত্র ১০ দেহরক্ষীসহ চলাফেরা করতেন সেলিম প্রধান

বাংলাদেশে অনলাইনভিত্তিক ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান। রাজধানীর গুলশানে একটি অভিজাত স্পা সেন্টারেরও মালিক তিনি। কোটি টাকার ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িতে সশস্ত্র ১০ দেহরক্ষী নিয়ে তার চলাফেরা।

তাকে আটকের পর এসব তথ্যসহ একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে তার সম্পর্কে।

সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব-১। সেলিম  থাই এয়ারওয়েজের বিজনেস ক্লাসের যাত্রী ছিলেন। ফ্লাইট ছাড়ার আগমুহূর্তে র‌্যাবের সদস্যরা তাকে আটক করা হয়।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, গুলশান-২ স্পা সেন্টারটি সেলিমের মালিকাধীন। এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং উঠতি বয়সের মডেল বা নায়িকার আনাগোনা ছিল। স্পা সেন্টারের আড়ালে তিনি সুন্দরী তরুণীদের তার ব্যবসার কাজে লাগাতেন। সুন্দরী তরুণী দিয়ে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে প্রভাবশালীদের সঙ্গে।

তিনি চাহিদা মতো দেশের বাইরে থেকেও সুন্দরী এনে দিতেন। আর এ কারণে স্পা সেন্টারটিতে প্রভাবশালীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এর বিনিময়ে ওইসব প্রভাবশালীর কাছ থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন।

সেলিম নিজের প্রভাবকে নিশ্চিত করতে ১০ জন দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা করতেন। এসব দেহরক্ষী স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত থাকত। সামনে-পেছনে ৫ থেকে ৬ টি গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করতেন।

তিনি নিজে সব সময় ল্যান্ডক্রুজার ব্যবহার করেন। তিনি যখন চলতেন তখন হুইসেল বাজিয়ে রাস্তা খালি করা হতো। যেন কোন ভিআইপি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে গুলশান এলাকার লোকজন এক প্রকার ভয়ে আতঙ্কে থাকতেন।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সেলিম প্রধানের উত্থান মূলত বিএনপি সরকারের সময়। সে সময় তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সঙ্গে ছিল তার দহরম-মহরম সম্পর্ক। এ কারণে তিনি ওই সময় থেকেই ছিলেন প্রভাবশালী ব্যক্তি।

নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ ঋণ। ব্যবসায় সেসব টাকা না খাটিয়ে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

১/১১ সময়ও তিনি ছিলেন ক্ষমতাধর। প্রভাবশালী এক ব্যক্তির সাথে সখ্যতার জন্য তার বিরুদ্ধে সে সময় কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

আর বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। জড়িয়ে পড়েন ক্যাসিনো ব্যবসায়।

তিনি গুলশানের নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে রুপালী ব্যাংক থেকে একশ’ কোটি টাকার ঋণ ওই ব্যাংকের সাবেক এক এমডির সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল। ঋণের ওই টাকাও সেলিম আত্মসাৎ করেন।

র‌্যাব জানতে পেরেছে, থ্যাইল্যান্ডেও সেলিমের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। সেখানে তিনি সেলিম ডন নামে পরিচিত। সেদেশের রাজধানী ব্যাংকক এবং পাতায়া শহরে তার একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ডিসকো বারও আছে।

সেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তার যাতায়াত ছিল ঘনঘন। সে সুযোগে তিনি সেদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। মূলত এ কারণেই তাকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে।


ঢাকা/মাকসুদ/জেনিস

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়