মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : কোরবানির ঈদের সময় পশুর চামড়া ব্যবসা যারা করেন তাদের এবার মাথায় হাত।
বড় গরুর চামড়া মাত্র ৩০০ টাকায় কিনেও আড়তদারদের কাছে ন্যূনতম লাভে বিক্রি করতে পারছেন না। পক্ষান্তরে মাত্র ২০/৩০ টাকায় ছাগলের চামড়া কিনেও লোকসান গুনতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে নগরীতে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করতে এসে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
আড়তদাররা বড় গরুর চামড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকার বেশি দিচ্ছেন না। মাত্র ২০ টাকায় কিনছেন ছাগলের চামড়া। এই অবস্থায় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
চট্টগ্রাম মহানগরীর মুরাদপুর, আতুরার ডিপু এলাকার বিভিন্ন চামড়ার আড়ত ঘুরে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চল থেকে কোরবানির গরু ছাগলের চামড়া কিনে এনে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করতে এসে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। মাত্র ৩০০/৩৫০ টাকা দামে চামড়া কিনেও ন্যূনতম লাভে এসব চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী ইব্রাহীম হোসেন রাইজিংবিডিকে জানান, তারা কোরবানির দিন বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি ঘুরে গড়ে ৩০০ টাকা দামে বড় বড় গরুর চামড়া কিনেছেন। ভেবেছিলেন এসব চামড়া অন্তত ৫০০ টাকা দামে বিক্রি হবে।
কিন্তু শহরে আড়তদারদের কাছে এনে তাদের মাথায় হাত পড়েছে। আড়তদাররা ২০০ থেকে ২৫০ টাকার বেশি দাম দিতে রাজি হচ্ছেন না। এতে চামড়াপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হচ্ছে। একই রকম বক্তব্য আনোয়ার, নুরুর রহমান, আরিফসহ আরো অনেক চামড়া বিক্রেতার।
এদিকে চট্টগ্রামের চামড়া আড়তদার সমিতির সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা ট্যানারি মালিকদের মন মর্জিমত চামড়া কিনতে হচ্ছে তাদের। চট্টগ্রামে কোনো ট্যানারি না থাকায় চট্টগ্রামে সংগৃহীত সব চামড়া ঢাকার ট্যানারিতে বিক্রি করতে হয়। তাই তারা যে মূল্য নির্ধারণ করে দেন, সেই দামের বেশি দামে চামড়া সংগ্রহের সুযোগ নেই।
এ বছর চট্টগ্রাম থেকে পাঁচ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল কাদের রাইজিংবিডিকে জানান, সমিতিভুক্ত ১১২ জন এবং এর বাইরে ১৫০ জন আড়তদার এবার চট্টগ্রাম অঞ্চলে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করছেন। এর মধ্যে গরুর চামড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা বর্গফুট এবং মহিষের চামড়া ২০টাকা বর্গফুট দামে সংগ্রহ করা হচ্ছে।
তবে সরেজমিনে তাদের বক্তব্য অনুযায়ী বর্গফুট দামে চামড়া সংগ্রহের কোনো চিত্র লক্ষ করা যায়নি। মূলত প্রতিটি চামড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দামে কিনছেন আড়তদাররা। এই অবস্থায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালীসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে চামড়া কিনে আড়তদারদের কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১৩ আগস্ট ২০১৯/রেজাউল/হাকিম মাহি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন