ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোতে যাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকা চায় দুদক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫৬, ১ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোতে যাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকা চায় দুদক

সিঙ্গাপুরের ম্যারিনা বেসহ বিভিন্ন ক্যাসিনোতে জুয়ায় অংশ নেয়া বাংলাদেশিদের তালিকা চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সিঙ্গাপুরের করাপ্ট প্র্যাকটিসেস ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (সিপিআইবি) পরিচালক উং হং কুন বরাবর পাঠানো চিঠিতে সেখানকার ক্যাসিনোতে প্রবেশকারী বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট নম্বরসহ তালিকা দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

গত ২৯ অক্টোবর দুদকের মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) আ ন ম আল ফিরোজের সই করা ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। আ ন ম আল ফিরোজ বিষয়টি রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, অবৈধ প্রক্রিয়ায় যারা অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন এবং সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছেন সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অভিযান শুরু করেছে। ইতোমধ্যে যেসব অপরাধী গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা জবানবন্দিতে সিঙ্গাপুরের ‘ম্যারিনা বে’সহ বিভিন্ন ক্যাসিনোতে অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এ অবস্থায় তদন্তের স্বার্থে যারা ক্যসিনোতে গিয়েছেন তাদের পাসপোর্ট নম্বরসহ তালিকা প্রয়োজন।

চিঠিতে জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনের ধারা অনুযায়ী দুই দেশের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার মধ্যে আইনি কার্যক্রমে সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারের শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের ক্যাসিনো জুয়াড়িদের নানা তথ্য উঠে আসছে অনুসন্ধানে। তারা সিঙ্গাপুরের ম্যারিনা বেসহ অন্যান্য ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে যেতেন, এমন তথ্য বেরিয়ে আসে। এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে দুদক এ চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা যায়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তিন সংসদ সদস্যসহ শতাধিক ব্যক্তির অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুদক। এরপর দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের টিম গঠন করে দুদক। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সালাউদ্দিন আহমেদ, গুলশান আনোয়ার প্রধান, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী।

এ পর্যন্ত ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। সর্বশেষ ৩০ অক্টোবর ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি ও কৃষকলীগ নেতা মোহাম্মদ শফিকুল আলমের (ফিরোজ) বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

এর আগে ২৯ অক্টোবর যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিছুর রহমানের ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও তার স্ত্রী সুমি রহমানের ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করে দুদক।

একইভাবে ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ও অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে যথাক্রম ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ও ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

২৩ অক্টোবর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও তার দুই সহযোগী এবং তার ভাই গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়।

এছাড়া, ২১ অক্টোবর জি কে বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী কথিত যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ও তার মা এবং বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ৩০২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে সংস্থাটি।


ঢাকা/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়