হবিগঞ্জে একদিনে ১৫৫০ স্কুলে বিলি হবে জাতীয় পতাকা
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ
মোঃ মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জে একদিনে ১৫৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা বিতরণ করবে জেলা প্রশাসন।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের উদ্যোগে এ জাতীয় পতাকা উৎসব আয়োজন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই পতাকা উৎসবের উদ্বোধন করবেন। একই সময়ে সকল উপজেলা সদরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়া হবে। জেলার ১৫৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ ফুট বাই ৩ ফুট সাইজের এই জাতীয় পতাকা বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে নির্ধারিত বেদীতে ১০ ফুট এসএস পাইপে উত্তোলন করা হবে এই পতাকা।
জেলা প্রশাসনের এই অনন্য উদ্যোগের বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়া এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সর্বমহল থেকে এর প্রশংসা করা হয়।
হবিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক ইউনিট কমান্ডার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠান বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি চমৎকার উদ্যোগ। অনেকেই জানেনা কিভাবে পতাকা উত্তোলন করতে হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সাইজ ও রংয়ের পতাকা উত্তোলন করে। এতে করে জাতীয় পতাকার অমর্যাদা হচ্ছে।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, ‘জাতীয় পতাকা আমাদের অহংকার। কিন্তু এর যথাযথ মূল্যায়ন যখন হয়না তখন আমরা দুঃখ পাই। নতুন প্রজন্মকে জাতীয় পতাকার মর্যাদা বোঝাতে এবং অনুভব করাতে জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
হবিগঞ্জ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এটি জেলা প্রশাসনের একটি ভাল ও সৃজনশীল উদ্যোগ। বছরের প্রথম দিনে আমরা বই উৎসব করে থাকি। এবার যুক্ত হয়েছে পতাকা উৎসব। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নয়, সকল প্রতিষ্ঠানেই যাতে একই রং ও আকারের পতাকা উত্তোলন করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নিয়ম থাকলেও অনেকেই তা করেনি। এ ব্যাপারেও সবাইকে সচেতন করা প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা হবিগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে জেলা প্রশাসনের একটি ভাল উদ্যোগ। এই পতাকার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনুধাবন করবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার কথা। আর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই রংয়ের ও সাইজের পতাকা উত্তোলন করলে দেখতেও ভাল লাগবে। এই পতাকা দেখলেই গর্বে আমাদের বুকটা ভরে যায়।’
বিশিষ্ট নাট্যকার রুমা মোদক বলেন, ‘এটি খুবই ভাল উদ্যোগ। এর মাধমে জাতীয় পতাকাকে সর্বোচ্চ সম্মান দেখানো নিশ্চিত হবে। ভবিষ্যতেও যাতে এই পতাকা উৎসব অব্যাহত থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
জাতীয় পর্যায়ে দেশের শ্রেষ্ঠ কলেজ শিক্ষকের পুরস্কার পাওয়া সরকারি বৃন্দাবন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র দেব বলেন, ‘পতাকা আমাদের জাতির পরিচয় বহন করে। বিদেশে গেলে যখন জাতীয় পতাকা চোখে পড়ে তখন আমরা এর সত্যিকারের উপলব্ধি অনুভব করতে পারি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি যথাযথভাবে এবং সঠিক জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করা হয় তাহলে আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম এই পতাকার মর্যাদা কিভাবে শিখবে। জেলা প্রশাসন যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাতে করে একটি নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করবে। এক সময় দেখা যাবে হবিগঞ্জের এই উদ্যোগকে জাতীয়ভাবে গ্রহণ করে সারা দেশেই জাতীয় পতাকা উৎসব হবে।’
এদিকে জাতীয় পতাকা উৎসব সফল করতে আগামী ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রেসব্রিফিং এর আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। এই প্রেসব্রিফিংএ সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক অমিতাভ পরাগ তালুকদার।
রাইজিংবিডি/ হবিগঞ্জ/২৭ আগস্ট ২০১৯/মোঃ মামুন চৌধুরী/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন