হাইকোর্টের নির্দেশে ধুলোর দূষণ কমাতে ব্যবস্থা নিল ডিএসসিসি

হাইকোর্টের নির্দেশনার পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) তাদের প্রধান সড়কগুলোতে ধুলোর দূষণ কমাতে বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হিসেবে সকাল ও বিকেলে পানি ছিটানোর কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিদিন ৯ টি গাড়ি ডিএসসিসির গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে পানি ছিটাবে। এতে ধুলোর দূষণ ও বায়ু দূষণ কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার ডিএসসিসি নগর ভবনের সামনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মেয়র সাঈদ খোকন।

সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ধুলোর দুষণ নিয়ন্ত্রণে মূল দায়িত্ব পালন করে মূলত পরিবেশ অধিদপ্তর। কিন্তু নাগরিকদের কথা বিবেচনা করে আমরা আজ থেকে একটি বিশেষ ক্র‍্যাশ প্রোগ্রাম চালু করছি। ডিএসসিসির প্রাইমারি রোডগুলোতে আমারা সকালে এবং বিকেলে দুই বেলা পানি ছিটিয়ে ধুলো এবং বায়ু দুষণ রোধ করার চেষ্টা করবো।

ধুলোর দূষণ নিয়ন্ত্রণের ডিএসসিসি বরাবরই কাজ করছে দাবি করে আদালতের কিছু নির্দেশনার কথাও উল্লেখ করেন সাঈদ খোকন।

তিনি বলেন, যেসব সড়কে উন্নয়ন কাজ চলছে যেসব স্থানে খোঁড়াখুঁড়ির মাধ্যেমে অযথা যদি কেউ ময়লা, বায়ু দূষণের পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখে তাহলে আমরা প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবো।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কাকরাইল থেকে মৎসভবন হয়ে গুলিস্তান রোড পর্যন্ত প্রতিদিন পানির গাড়ি দিয়ে ২ টি ট্রিপে পানি ছিটানো হবে। এছাড়া তোপখানা রোড, সেগুনবাগিচা, আনন্দবাজার, পলাশী, শাহবাগ, কাঁটাবন , সাতমসজিদ রোড, হাজারীবাগ, ঝিগাতলা, সাইন্সল্যাব, নীলক্ষেত, হাতিরপুল, মগবাজার, কাকরাইল,  শান্তিনগরসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন প্রায় সব এলাকায় সারাদিনে দুই বার পানি ছেটানো হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, ডিএসসিসির নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. ইমদাদুল হক, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক এয়ার কমোডোর জাহিদ হোসেন, অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক মিল্লাতুল ইসলাম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই কমিটি বায়ু দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং আরো কী কী উপায়ে বায়ু দূষণ রোধ করা যায় সে ব্যাপারেও সুপারিশের আদেশ দেয়া হয়েছে।

জনস্বার্থে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এলাকায় অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ দেন আদালত। সেই সঙ্গে রাজধানীর রাস্তা ও ফুটপাতে ধুলোবালি, ময়লা ও বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ঢাকা শহরের যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার (রাস্তা ও নির্মাণাধীন কাজের জায়গা) কাজ চলছে, সেসব এলাকা ঘেরাও করে কাজের পদক্ষেপ নিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।

১৫ দিনের মধ্যে আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ পালন করে এর দুই সপ্তাহের মধ্যে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিপ্তরের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

এছাড়া যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ চলছে এবং যেসব এলাকায় ধুলোবালি বেশি, সেসব এলাকায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিনে দুবার পানি ছিটাতে দুই সিটির মেয়র ও নির্বাহীদের নির্দেশ দেয়া হয়। এ আদেশ অনুসারে বিবাদীরা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন।

পরে এ নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাহীকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।

 

ঢাকা/নূর/জেনিস