ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হাওরের চাষিদের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে করোনা

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ১০ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হাওরের চাষিদের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে করোনা

হবিগঞ্জের হাওর অঞ্চলে বোরো ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অন্য এলাকা থেকে কৃষি শ্রমিকরা আসতে পারছেন না। স্থানীয় শ্রমিকদের মাঝেও করোনা নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শ্রমিকের অভাবে কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না অনেক কৃষক।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, বাহুবল, নবীগঞ্জ উপজেলায় রংপুর, কুড়িগ্রাম থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার ধান কাটার শ্রমিক আসতেন। তারা ফসল তোলার আগ পর্যন্ত এ জনপদে অবস্থান করে ধান কাটা, মাড়াই, ধান শুকানোর কাজ করতেন। এবার গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা আসতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশার কৃষক দিদারুল আলম বাবলু বলেন, গত মৌসুমে ১৫০ কেদারা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। বেশি লোকসানের কারণে এ মৌসুমে ৫০ কেদারা জমিতে বোরো চাষ করেছি। একদিকে কৃষি উপকরণের দাম বেশি, অন্যদিকে ধানের দাম নেই। কয়েক বছর ধরে ধান কাটা শ্রমিকের তীব্র অভাব। এ মৌসুমে করোনাভাইরাসের কারণে শ্রমিক সংকট আরো ঘনীভূত হলো। বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের ফলন তেমন ভালো হবে না বলে মনে হচ্ছে। তাছাড়া সরকারি গুদামেও ধান দেওয়া কঠিন। সবদিক মিলিয়ে খুব কঠিন অবস্থায় আছি।

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. জালাল উদ্দিন বলেন, এ জেলার হাওর অঞ্চলে বোরো ফসল ঘরে তুলতে অন্য জেলা থেকে শ্রমিক আসে। করোনায় দেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে। যেহেতু মানুষ এখন বেকার সময় পার করছে, সতর্কতার সাথে দেশীয় শ্রমিকরা সক্রিয় হলে তেমন একটা বেগ পেতে হবে না। এ ক্ষেত্রে অনেকেই ধান কাটা মেশিনের সাহায্য নেবে। আমরা কৃষকদের পাশে আছি।

হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, খরায় ধানের খুব বেশি ক্ষতি হবে না। কারণ, সেচ ব্যবস্থা থাকায় সঠিকভাবে জমিতে সেচ দেওয়া গেছে। করোনাভাইরাসের কারণে গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষ বেকার হিসেবে বসে আছে। তারা কাজ খুঁজছে। আমরা বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক সর্দারদের (শ্রমিক সরবরাহকারী) সাথে কথা বলেছি। তারাও বলছে, পর্যাপ্ত শ্রমিক সরবরাহ করতে পারবে তারা। বাইরে থেকে শ্রমিকদের আনার ব্যাপারেও আমরা বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা তাদেরকে অতিথি শ্রমিক হিসেবে গ্রহণ করব। প্রত্যেক উপজেলায় দুটি করে স্কুল খুলে দেওয়া হবে তাদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য। আমরা তাদেরকে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেব। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও আমরা মিলে বোরো ধান কাটা নিশ্চিত করতে কাজ করছি।


হবিগঞ্জ/মামুন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়