টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ি উপজেলায় কৃষিতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. সুকল্প দাস এ তথ্য দেন।
কৃষিবিদ ড. সুকল্প দাস বলেন, ‘এবারের বন্যায় শেরপুর জেলায় সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে আমনের আবাদ ও শীতকালীন আগাম সবজি খেতের। এবার জেলায় আমনের আবাদ হয়েছে ৯৩ হেক্টর জমিতে যার প্রায় ৫০ শতাংশ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ২ হাজার হেক্টর জমির সবজির আবাদের অর্ধেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পানি এখন চলে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমি থেকেও কিছু ধান পাওয়া যাবে। পানি নেমে যাওয়ার পরে আমরা আসল ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাবটি করতে পারবো। আপাত দৃষ্টিতে আমরা যা দেখছি, তাতে কৃষিতে শেরপুরে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
ড. সুকল্প দাস বলেন, ‘শেরপুর জেলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তারা হয়তো বড় আকারের প্রণোদনা বিবেচনা করবেন।প্রতিবছরই আমরা দুর্যোগের জন্য কৃষি প্রণোদনা পাই। আমাদের কর্তৃপক্ষ অবশ্যই এবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন। আমরা আশা করবো, খাদ্যবান্ধব শেরপুর জেলার কৃষকরা যেন এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে।’
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘সব নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। কৃষি উদ্বৃত্ত শেরপুর জেলার অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি। বন্যার পানি কমে গেলে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে শেরপুরে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। অনেক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার ও সহযোগীতায় কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসনসহ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। ইতোমধ্যেই বন্যার পানিতে ডুবে জেলার তিন উপজেলায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকাল থেকে নদ-নদীর পানি কমায় বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন দুর্গতরা।