সারা বাংলা

রাজশাহীতে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, বাস চলাচল বন্ধ

বাস শ্রমিকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা ব্রিজ এলাকায় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে তারা সেখানে জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। কিছু সময় পর তারা সড়কের দুইপাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। 

অটোরিকশার চালকদের এই কর্মসূচির কারণে ভাঙচুর আতঙ্কে রাজশাহী থেকে নওগাঁর উদ্দেশ্যে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। নওগাঁর বাসগুলো মোহনপুর পর্যন্ত চলাচল করছে। রাজশাহী-তানোর-মুণ্ডুমালা রুটের বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

রাজশাহী বাস মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেলাল বলেন, “আজ সকালে সিএনজি অটোরিকশা চালকরা নওহাটায় আমাদের দুটি বাস ভাঙচুর করেছে। এ জন্য আতঙ্কে ওই রুটে রাজশাহী থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। নওগাঁর বাস মোহনপুর পর্যন্ত এসে ফিরে যাচ্ছে।”

এদিকে, সমস্য সমাধানে আজ বিকেল ৩টায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার নূর আলম সিদ্দিকী উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত। এ জন্য ট্রাফিক বিভাগ উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছে। আমরা আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে।”

গত সোমবার সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা তানোর উপজেলা সদরে বাসের ছয়জন চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরকে মারধর করেন। এর জেরে সেদিন দুপুর থেকে রাজশাহী থেকে সব রুটের বাস বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। রাতে বাস চলাচল শুরু হলেও গতকাল মঙ্গলবার সকালে আবারো বন্ধ করে দেওয়া হয় বাস চলাচল।

এরপর বাস শ্রমিকেরা নগরের শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে লাঠি ও হাতুড়ি নিয়ে রেলগেট সিএনজি স্ট্যান্ডে হামলা করেন। তারা ৭০ থেকে ৮০টি সিএনজি চালিত অটোরিকশার কাঁচ ভাঙচুর করেন। পরে দুপুর থেকে আবারো বাস চলাচল শুরু হয়। আজ সকাল থেকে রাজশাহী-নওগাঁ রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

পবার নওগাটায় মানববন্ধনে সিএনজি চালকরা বলেন, সিএনজি স্ট্যান্ডে এসে বাস শ্রমিকরা তাদের ওপর আক্রমণ করে। তারা প্রায় ৯০টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করেছে। যাত্রী-চালকসহ অন্তত ৪০ জনকে মারধর করেছে বাস শ্রমিকরা। তারা এই ঘটনার বিচার চান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসন বিচার করতে না পারলে লাগাতার আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা।

জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিক আলী পাখি সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে হামলার দায় স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, “ওরা (সিএনজি অটোরিকশা চালক) নিজেরা নিজেরা ক্যাচাল করে নিজেরাই গাড়ি ভেঙেছে।”

রাজশাহীর পবা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, “সিএনজি অটোরিকশার চালকরা বাস ভাঙচুর করতে পারেন এই আশঙ্কায় বাস চলছে না। আবার সিএনজি অটোরিকশার চালকরাও তাদের গাড়ি (সিএনজি অটোরিকশা) চলতে দিচ্ছেন না। তারা বলছেন, বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সড়কে বাস যেমন বন্ধ থাকবে তেমনি সিএনজি অটোরিকশাও বন্ধ রাখতে হবে।”