বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্নিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে পটুয়াখালীর উপকূল জুড়ে টানা বর্ষন অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রোবাবর বিকেল থেকে সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বছরের সর্বোচ্চ ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে টানা বর্ষণে পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। নদ-নদীর পানির উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে জেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম। এছাড়া বাতাসের চাপ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্নিঝড় সিত্রাং আজ দুপুর ১২টার দিকে পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিলো। এটি আজ (সোমবার) দিবাগত রাতে বা আগামীকাল (মঙ্গলবার) ভোর নাগাদ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিকট দিয়ে বরিশাল ও চট্রগ্রাম অতিক্রম করতে পারে। আর তাই ইতোমধ্যে পটুয়াখালীর পায়রা ও মোংলা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া সব মাছধরা ট্রলার সমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। তবে সাগরে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকায় বেশিরভাগ ট্রলার নিরাপদে রয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
ঘূর্নিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় সোমবার সকালে কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সিপিপি সদস্যদের নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ অধ্যক্ষ মহিবুর রহমান মহিব, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম রাকিবুল আহসানসহ সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংঙ্কর চন্দ্র বৈদ্য জানান, উপজেলায় ১৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পানি বিশুদ্ধ করন ট্যাবলেট ও শুকনো খাবার মজুদ আছে।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালী জেলায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বৃষ্টির ধারা আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। ঘূর্নিঝড় সিত্রাং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পটুয়াখালীর উপকূল অতিক্রম করতে পারে।