একটু ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিলেন ইশ সোধী। হাসান মাহমুদের ওপর রাগ করে ব্যাট দিয়ে গ্লাভসে তালি দিতে দিতে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটতে শুরু করেন। একটু আগেই তাকে মানকাড করেছিলেন বাংলাদেশি পেসার।
বোলিংয়ের আগে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান সোধী। হাসানও সুযোগ পেয়ে ভাঙেন স্টাম্প। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো বোলার আগে এমন কিছু করেননি। তাইতো ফিল্ডার, বোলার সবার চোখে মুখে ছিল হাসির ঝিলিক। টিভি আম্পায়ার জায়ান্ট স্ক্রিনে নিজের সিদ্ধান্ত জানালে বাংলাদেশ সাফল্য পায়। তখন নতুন ব্যাটসম্যান ট্রেন্ট বোল্টও মাঠে প্রবেশ করেন।
কিন্তু খানিকবাদেই মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম নতুন এক ঘটনার সাক্ষী হয়। বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস আম্পায়ার মারিয়াস ইরাসমাসের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান। কি কথা হয়েছিল দুজনের তা বোঝা যাচ্ছিল স্পষ্ট। লিটন ব্যাটসম্যান সোধীকে মাঠে ফেরাতে অনুরোধ করেন আম্পায়ারকে। অধিনায়কের অনুরোধ রাখেন ইরাসমাস।
ড্রেসিংরুমের পথে এগিয়ে যেতে থাকা সোধী তখন নতুন জীবন পান। পুনরায় ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। হাসানের কাছে দৌড়ে গ্লাভস খুলে ব্যাট ফেলে তাকে বুকে জড়িয়ে নেন। দুজনের মুখেই তখন ছিল এক গাল হাসি।
ক্রিকেটে এখন মানকাড বলে কোনো টার্ম নেই। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) অন্য সাধারণ আউটের মতোই মানকাডকে ‘রান আউট’ হিসেবে বিবেচনা করছে। আগে থেকেই এই আউট বৈধ ছিল। বোলার যেমন ক্রিজের বাইরে পা ফেললে শাস্তিস্বরূপ হিসেবে ‘নো বল’ ডাক দেওয়া হয়, তেমনই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া ব্যাটসম্যানকে রান আউট করলেও তা পুরোপুরি বৈধ।
সোধীকে রান আউট করে মাঠে ফিরিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্প্রিটে বাহবা পাচ্ছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন ঘটনা একদমই বিরল। রান আউটের আবেদন করে তাতে সফল হওয়া, এরপর ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে আনা; পুরোটাই তালগোলপাকানো এক ঘটনা।
পরিস্থিতি বিবেচনায় এসব ঘটনা যে পরিবর্তন হয় তা বলতে দ্বিধা নেই। এশিয়া কাপের আগে পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে এমন ঘটনা কিন্তু হয়েছিল। পাকিস্তানের শাদাব খান ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গেলে স্টাম্প ভাঙেন ফজল হক ফারুকি। আফগানিস্তান ম্যাচটা জিততে পারেনি কিন্তু শাদাব খানকে রান আউট করেছিল ঠিকই। এরকম ঘটনা আরও আছে। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী যা পুরোপুরি বৈধ।
সোধীকে যখন রান আউট করেছিল বাংলাদেশ তখন তার রান ছিল ১৭। জীবন পেয়ে স্কোরবোর্ডে আরও ১৮ রান যোগ করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার ৩৫ রানের ইনিংসে নিউ জিল্যান্ড শেষ দিকে দারুণভাবে লড়াই করে ২৫৪ রানের লড়াকু পুঁজি পেয়েছে। ম্যাচ জিতলে হয়তো সোধীর এই অবদান নিয়ে কথা হবে সামান্য। কিন্তু বাংলাদেশ হেরে গেলে নিঃসন্দেহে সমালোচনা হবে খেলোয়াড়দের।