অনেক আশা নিয়ে বিশ্বকাপে গিয়েছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনাল। কিন্তু সেমিফাইনাল তো দূরের কথা, আসরে দুটির বেশি জয় তুলে নিতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। সাত ম্যাচে হারের ক্ষত নিয়ে দেশে ফিরেছে। বিশ্বকাপের আগের আসরগুলোয় ন্যূনতম তিনটি করে জয় ছিল বাংলাদেশের। ভারতের মাটিতে সেটিও না হওয়ায় সাকিবদের কড়া সমালোচনা করেছেন সাবেক ক্রিকেটার ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক আকরাম খান।
এই বিশ্বকাপ ঘিরে অনেক প্রত্যাশা ছিল জানিয়ে আকরাম বলেন, ‘মনে হয় না বাংলাদেশ এত বাজে খেলেছে এর আগে। ১৯৯৯-তে ছয়টা ম্যাচের দুটিতে জিতেছি। এবার প্রত্যাশা বেশি ছিল। আমরা পরিকল্পনাও করেছিলাম অনেক ভালোভাবে। চার বছর আগে থেকেই শুরু করেছিলাম যেহেতু ভারতে খেলা হবে। অন্তত কন্ডিশন তো আমাদের মতো হবে।’
বিশ্বকাপের আগে ও বিশ্বকাপের মাঝে দল নিয়ে বেশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ব্যর্থতার পেছনে অনেকেই এই একটা কারণই বড় করে দেখছেন। আকরাম খানও মনে করেন, এই কারণেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভরাডুবি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অনেক আশা ছিল আমাদের। একটা দেশে যদি খেলার আগে এত কথাবার্তা হয় অন্য বিষয় নিয়ে, তো ওই দল কোনোদিন ভালো করতে পারবে না। এটা আমি এশিয়া কাপেও বলেছিলাম। কিন্তু আমরা এক্সপেরিমেন্ট করে পুরো দলকে দাঁড় করাতে পারিনি। একটা দলই আমরা দাঁড় করাতে পারিনি। এত এক্সপেরিমেন্ট করলে আমার মনে হয় না কোনো দেশ ভালো করবে।’
বিশ্বকাপের আগে সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব ছিল তুঙ্গে। দেশ ছাড়ার আগেই অধিনায়ক সাকিব দেশের একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে গেছেন। এ নিয়ে আকরাম খান বলেন, ’আমরা সত্যি কথা বলতে কী অনেকে কথায় জিততে চায়। এজন্য দেশের পারফরমান্স ওরকম ভালো হয় না। খেলোয়াড়দের উচিত মাঠে গিয়ে পারফর্ম করা। সে জিনিসটা আমরা করতে পারিনি। মাঠের বাইরে অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করেছি। এটা সবার বোঝা উচিত ছিল।’
‘কারণ এই দেশ কারো ব্যক্তিগত না, সবার। যদি বাংলাদেশ ভালো করে, সবার ভালো লাগবে। কেউ যদি নিজেরা নিজেদের মতো করতে চায় তাহলে তো এটা হবে না। এটা হওয়া উচিতও না। সবসময় আমি দেখেছি যখন একটা মেজর টুর্নামেন্ট হয় তখন খেলা ছাড়া খেলার বাইরের জিনিসগুলো নিয়ে অনেক বেশি কথাবার্তা বলি। এজন্য সবাই চাপে পড়ে যায়।’-তিনি আরও যোগ করেন।
সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই দায়টা আমি মনে করি সবারই। সবাইকে সম্মান করতে হবে। এবং যারা জড়িত আছে তাদের সম্মানটা দেওয়া উচিত। যারা অনেকদিন ধরে খেলছে, তাদের ওই সম্মানটা দেওয়া উচিত।’
‘যারা নতুন খেলোয়াড় আসছে, ওদের বোঝাতে হবে ওরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমার একটাই কথা সম্মান করাটা গুরুত্বপূর্ণ। ছোট-বড় সেটা না। যে জায়গায় আছে সবাইকে সবার সম্মান দিয়ে কথা বলা। যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে বোর্ডে এসে কথা বলে সমাধান করা উচিত।’– আরও যোগ করেন আইসিসি ট্রফি জয়ী অধিনায়ক।