ছয় উইকেট হারিয়ে ৭৯ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয়দিনেই ইংল্যান্ডের জয় তুলে নেওয়াটা ছিল অনুমিত। আর এদিনই বাইশ গজে শেষ হচ্ছে জেমস অ্যান্ডারসনের পথচলা। তাইতো লর্ডস স্টেডিয়ামে ইংলিশ দর্শকদের ঢল নেমেছিল। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। ম্যাচ শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা আগেই ৪০ হাজার দর্শক মাঠে প্রবেশ করেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেটা বৃদ্ধি পেতে থাকে। টেস্ট ক্রিকেটে এতো দর্শক, ভাবা যায়!
ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে জেমস অ্যান্ডারসনের বিদায়ের কিছুটা আনুষ্ঠানিকতা সারা হলো। সতীর্থরা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়রা তাকে মাঠে প্রবেশের সময় গার্ড অব অনার দিলেন। এ সময় প্রায় অর্ধলক্ষাধিক দর্শক দাঁড়িয়ে বিদায়ী অভিভাদন জানালো অ্যান্ডারসনকে। তাদের করতালি চললো লম্বা সময় ধরে। প্রায় ম্যাচ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।
অ্যান্ডারসন দর্শকদের করতালি আর অভিবাদনে যারপরনাই সিক্ত হন। তার চোখ জোড়া ভিজে যায়। বার বার কান্না নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। বয়সের ছাপ পড়া চেহারায় যেন রাজ্যের হাহাকার, বেদনার নীল রঙ যেন খেলা করছে তার চোখে-মুখে।
অবশ্য বেদনাযুক্ত ভারাক্রান্ত চেহারায় হাসি ফুঁটতে বেশি সময় লাগেনি। দলীয় ৮৮ রানের মাথায় জশুয়া ডি সিলভাকে আউট করে বিদায়ী ম্যাচে নিজের চতুর্থ উইকেট শিকার করেন। তাতে আরও এক দফা স্টেডিয়াম জুড়ে মুহূর্মুহ করতালির রোল পড়ে যায়।
অবশ্য এই ম্যাচটি বেশিক্ষণ দেখতে পারেননি দর্শকরা। ৭৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাকি উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায় ১৩৬ রানে। তাতে অ্যান্ডারসনের বিদায়ী টেস্টে ইংল্যান্ড ইনিংস ও ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে জয় পায়।
ম্যাচ শেষে ক্যামেরা ও দর্শক সবার চোখ ছিল অ্যান্ডারসনের দিকে। শুরু হয় অ্যান্ডারসনের বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা। দর্শকস্রোত আর চোখের জলে ১৮৮ টেস্ট খেলা অ্যান্ডারসন বিদায় নেন। পরবর্তী টেস্ট থেকে আর খেলোয়াড় নয় ভিন্ন ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে।