সারা বাংলা

জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ বের করতে হবে: তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‌‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই। আমরা কিছু যুক্তি উপস্থাপন করেছি, কিন্তু এর বাইরেও অনেক কাজ করতে হবে। দেশে রাজনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ বের করতে হবে। যদি আমরা জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিতে পারি, তাহলে আমরা অর্থনৈতিকসহ সবদিক থেকেই মুক্তি পেতে সফল হবো।’

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বেলকুচি, চৌহালী ও এনায়েতপুর থানা বিএনপি আয়োজিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদদের স্মরণ স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘গণ-আন্দোলনের জনরোষ থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। তার বিদায়ে দেশের মানুষ নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছেন। স্বৈরাচারী সরকারের প্রধান পালিয়ে গেলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনো রয়ে গেছে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে বাংলাদেশের মানুষের যে আশা ও প্রত্যাশা তা পূরণ করতে সক্ষম হবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়েছি, মূলত বাংলাদেশের মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আজ যারা আছেন, এই মানুষগুলোর মধ্যে অনেককেই আমরা হারিয়েছি। অনেকেই শারীরিকভাবে আহত হয়েছেন। তাদের সবার আত্মত্যাগের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা। স্বৈরাচারকে বিদায় করেছি, অল্প লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। সামনে আরও অনেক পথ বাকি আছে। সেই পথ পাড়ি দিতে পারলে, মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হবে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা যদি এই এলাকার দিকে তাকাই তাহলে আমরা সম্ভাবনাময় একটি এলাকা দেখতে পাই। সিরাজগঞ্জের নাম আসলেই সামনে ভেসে ওঠে তাঁত শিল্পের কথা। এই পেশার সঙ্গে অসংখ্য মানুষ জড়িত। আমার ইচ্ছা, বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে এই তাঁতশিল্পের পাশে এসে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ। সারা পৃথিবীর নানা প্রান্তে বাংলাদেশিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। তাদের মাধ্যমে এই শিল্পকে কীভাবে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায় সেই চেষ্টা আমরা করব।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আমরা আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম যে মানুষগুলো আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ আপনাদের (বিএনপি নেতাকর্মীদের) দিকে তাকিয়ে আছেন। তাই দলের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীদের সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে।’

এর আগে, স্মরণসভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে বলেন, ‘তারেক রহমান গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কটের সিধ্যান্ত নিয়েছিলেন। এটা দারুণ একটা সিদ্ধান্ত ছিল। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে না যাওয়া নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছিল। পরে সবাই বুঝতে পেরেছে তারেক রহমানের সেই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।’

বৃষ্টির কারণে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর ধরে গুম করছে, একের পর এক গুম-খুনের মধ্যে দিয়ে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে নিহত ও আহতদের স্মরণ করছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তরুণদের একটা বড় ভূমিকা আছে। এই ভূমিকায় আছেন তারেক রহমানও। গণ আন্দোলনের জনরোষ থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনা।’

এনায়েতপুর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।