বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়কে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় জাতীয় পার্টির সমালোচনা করেছেন সারজিস আলম। দলটির উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি, সেখানে জাতীয় পার্টি তুচ্ছ বিষয়। আবু সাঈদের রক্তমাখা রংপুরে কোনো স্বৈরাচারের দোসরদের চোখ রাঙানোকে ভয় পান না বিপ্লবী ছাত্ররা। যারা বিগত সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্টকে ক্ষমতায় রাখতে বৈধতা দিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন তারা প্রত্যেকে দোসর।’
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকে রাষ্ট্র সংস্কারের তারুণ্যের ভাবনা শীর্ষক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী সরকারের রেখে অন্যতম দোসর বাংলাদেশের মহামান্য পদে থেকে নতুন করে ষড়যন্ত্র করছেন। তাকে ওই পদ থেকে সরানোর জন্য আমাদের আলোচনা চলছে।’
শিগগিরি রংপুরে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেন ছাত্র আন্দোলনের এই অন্যতম সমন্বয়। সেখানে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া ও নাহিদ ইসলাম উপস্থিত থাকবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। বিগত সময়ে উন্নয়ন বঞ্চিত রংপুরকে এগিয়ে নিতে আলোচনা করা হবে সম্মেলনে বলেও জানান সারজিস আলম।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. শওকাত আলী, বেরোবির প্রক্টর প্রমুখ।
পরে ছাত্রদের নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বের হয়ে পার্ক মোড়ের এলাকায় রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে মিছিলে নেতৃত্ব দেন সারজিস আলম।
এর আগে, আজ সকালে রংপুর সফরে আসেন সারজিস আলম। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলামের সঙ্গে তিনি পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়ার বাবনপুর গ্রামে যান। সেখানে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তারা। পরে আইজিপির সঙ্গে সারজিস আলম রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক।
এদিকে, সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয় পার্টি। দুপুরে দলটির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে মিছিলটি বের হয়।
সমাবেশে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘সমন্বয়ক সারজিসের একা রংপুরে আসার ক্ষমতা নেই। এ কারণে পুলিশের আইজিপি’র সঙ্গে তিনি এখানে এসেছেন। এটা কাপুরুষতার পরিচয়। রংপুরের মাটিতে তাদের যদি কোনো সমাবেশ হয়, তবে সেখানেই তাদের প্রতিহত করা হবে।’
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রংপুর সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবো। তবে, জাতীয় পার্টির পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী, রংপুরে অবাঞ্চিত করা দুই নেতা (সমন্বয়ক) যদি প্রকাশ্যে কোনো সমাবেশ করেন, তাহলে প্রতিহত করা হবে।’