উসমান খান ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি শতক পেয়েছিলেন ২০২৩ সালে বিপিএল খেলতে এসে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ১০৩ রানের ইনিংস খেলে তার ক্রিকেট পৃথিবী পাল্টে গেল। দুই বছরে তার নামের পাশে আরও তিন টি-টোয়েন্টি শতক। শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি, ২০২৫) সেই সংখ্যাটাকে পাঁচে নিয়ে গেলেন পাকিস্তানি ওপেনার।
নাম পাল্টে নতুন মালিকানায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এখন চিটাগং কিংস। উসমান খান নিজের পারফরম্যান্স অবশ্য পাল্টাননি। বিপিএলের এবারের আসরের প্রথম সেঞ্চুরি আসলো তার ব্যাট থেকে। খেললেন ৬২ বলে ১২৩ রানের ইনিংস। তাতে চিটাগং কিংস ৫ উইকেটে ২১৯ রানের বিশাল পুঁজি পায়। যা এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দলীয় রান। ওই রান তাড়া করতে গিয়ে দুর্বার রাজশাহী আটকে গেল ১১৪ রানে। ১০৫ রানের বিশাল জয়ে বিপিএলে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল চিটাগং।
উসমানের একার রানই করতে পারল না রাজশাহী। আগের দিন ঢাকা ক্যাপিটালসের রান অনায়েসে তাড়া করে রাজশাহী প্রথম জয় তুলে নিলেও আজ পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা রাখতে পারল না। তাতে তিন ম্যাচে দ্বিতীয় পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেতে হলো তাদের। অন্যদিকে চিটাগং কিংস দ্বিতীয় ম্যাচে পেল প্রথম জয়ের স্বাদ।
উসমান ৪৮ বলে ছুঁয়ে ফেলেন তিন অঙ্কের ল্যান্ডমার্ক। ১৩ চার ও ৬ ছক্কায় ১৯৮.৩৮ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংসটি ছিল আক্রমণাত্মক, আগ্রাসী এবং চোখ ধাঁধানো।
ইনিংসের শুরুতে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন রানের খাতা খোলার আগে আউট হন। দ্বিতীয় উইকেটে ১২০ রানের জুটি গড়েন গুরহাম ক্লার্ক ও উসমান। দুজনের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে চিটাগং বড় স্কোরের ভিত পেয়ে যায়। ক্লার্ক শফিউলের করা ওভারে ২২ রান তুলে নেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ২৫ বলে ৪০ রানে থামলেও উসমান ফিফটির পর সেঞ্চুরি তুলে নেন। ২১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন। ফিফটি থেকে সেঞ্চুরিতে যান পরের ২৮ বলে।
স্পিনার ও পেসারদের কড়া শাসন করেন এই ব্যাটসম্যান। শর্ট বলগুলোকে পুল করেছেন চোখের পলকে। তার সেঞ্চুরিতে আড়াল হয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনের ঝড়ো ২৮ রানের ইনিংস। ১৫ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ইনিংসটি সাজান মিঠুন। শেষ দিকে হায়দার আলীর ৮ বলে ১৯ রানের সুবাদে চিটাগংয়ের রান চূড়ায় যায়।
আগের ম্যাচে ৭ উইকেট পাওয়া তাসকিন এবার পেয়েছেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন সোহাগ, শফিউল ও রায়ান বার্ল।
আগের দিন একই মাঠে ১৭৫ রান করতে গিয়ে ১১ বল আগে জয় নিশ্চিত করে রাজশাহী। ২৪ ঘণ্টায় পাল্টে গেল তাদের ব্যাটিং। ব্যাটসম্যানরা আসা-যাওয়ার মিছিলে লেগে ছিলেন। দায়িত্ব নিয়ে কেউই পারেননি ইনিংসটি লম্বা করতে। ওপেনিংয়ে মোহাম্মদ হারিস ভালো শুরু পেয়েছিলেন। ২ চার ও ৩ ছক্কায় ১৫ বলে করেছিলেন ৩২ রান। এরপরই দৃশ্যপটে পরিবর্তন। টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা একের পর এক সাজঘরে ফেরেন আলগা শট খেলে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ রান করেন আকবর। ইয়াসির আলীর ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। এছাড়া কেউই বিশের ঘর পেরোতে পারেননি।
বল হাতে চিটাগং কিংসের সেরা আরাফাত সানী ও আলিস আল ইসলাম। দুজন ৩টি করে উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ ওয়াসিম।
ঢাকায় প্রথম পর্বে দুই দল জয়-পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা পেয়েছে। পরের লড়াইটা সবার সিলেটে। চায়ের শহরে দলগুলো কেমন করে সেটাই দেখার।