খেলাধুলা

বিশ্বকাপ শেষে থাকছেন না ডোনাল্ড

তানজিদ তামিমের খেলা শট গেল মাঠের আরেক প্রান্তে। স্পিনারদের বল খেলছিলেন তানজিদ। লাগাতার আক্রমণ করে যাচ্ছিলেন। বল কুড়াতে থাকা বয়রাও ক্লান্ত। একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যালান ডোনাল্ড ও শ্রীধরণ শ্রীরাম তানজিদের ব্যাটিং দেখছিলেন। আলোচনা থামিয়ে ডোনাল্ড ছুটলেন বল কুড়াতে।

মাঠের পশ্চিম দিক থেকে বল কুড়িয়ে ফেরত পাঠিয়ে ডোনাল্ড সেখানে অপেক্ষায় আরেকটি বল আসবে বলে। তানজিদ কয়েক বল পর সেখানে খেললেন শট। এবার সরাসরি ক্যাচ নিয়ে ডোনাল্ডের সে কি হাসি!

পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলছে বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া বধের প্রস্তুতি। দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলে বাংলাদেশের অনুশীলন। ভরাডুবির বিশ্বকাপ শেষের প্রহর গুনছে বাংলাদেশ। ৮ ম্যাচে ৬ হারের তিক্ত স্বাদ নিয়ে বাংলাদেশ অপেক্ষায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার।

তবে বাংলাদেশের থেকেও এই সফর শেষ করার বেশি তাড়া পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের। কেননা বিশ্বকাপের পর তাকে আর পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে চুক্তি এই প্রোটিয়া কোচের। বিশ্বকাপের আগে ডোনাল্ড বোর্ডকে জানিয়েছেন, চুক্তি নবায়ন করতে ইচ্ছুক নন। দায়িত্ব ছাড়তে চান চুক্তি মোতাবেক।

বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ আছে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেখানেও তার থাকা অনিশ্চিত। ফলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটিই ডোনাল্ডের বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে শেষ অ্যাসাইনমেন্ট হয়ে থাকছে।

২০২২ সালের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডোনাল্ডকে নিয়োগ দেয় বিসিবি। ওটিস গিবসনের জায়গায় তাকে যুক্ত করে টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশে দেড় বছর কাজ করার পর চাকরি ছাড়তে যাচ্ছেন তিনি। শুরুতে তাকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত নিয়োগ দিয়েছিল বিসিবি। কাজে ভালো করায় এক বছর তার চুক্তি বাড়ানো হয়। পেসারদের সঙ্গে তার সখ্যতাও ছিল ভালো। দারুণ রসায়নে তাসকিন, মোস্তাফিজ, হাসান, তানজিমদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নিজের ইচ্ছাতেই বাংলাদেশে কোচিংয়ের সফরের ইতি টানতে যাচ্ছেন।

তবে শোনা যাচ্ছে, কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। যে কারণে কাজে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। অনেক বিষয়ে মতের অমিলও রয়েছে। যার প্রমাণ মেলে দিল্লিতে ঘটে যাওয়া ঘটনা। বাংলাদেশের টাইমড আউটের ঘটনা কোনোভাবেই মানতে পারেননি তিনি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘(ক্রিকেট মাঠে) আমি এমন কিছু দেখতে চাই না। আমার মন বলছিল মাঠে ঢুকে বলি, যা হয়েছে যথেষ্ট হয়েছে, আমরা এর পক্ষে না। আমরা এমন দল না যে এর পক্ষ নেব। আমি শুধু সেখানে গিয়ে বলতে চাচ্ছিলাম, যথেষ্ট হয়েছে আর না।’

বিসিবি তার এই মন্তব্যকে খুব ভালোভাবে নেয়নি। তবে খুব বেশি কিছু করার সুযোগও দেখছে না বিসিবি। আর একটি ম্যাচের পর চলে যাচ্ছেন বলে তাকে সসম্মানে বিদায় বলতে চায় দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।