খেলাধুলা

রিজওয়ানকে নিয়ে গর্বিত পঞ্চগড়বাসী

যুব এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম সদস্য চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ফাইনালে ব্যাট হাতে তিনি দিয়েছেন নির্ভরতার প্রতিদান। খেলেছেন ৬০ রানের সময়োপযোগী ইনিংস। যা ম্যাচে দ্বিতীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান। আসরজুড়ে ৮৪ স্ট্রাইকরেটে ১২৭ রান করেছেন রিজওয়ান। একই সাথে বল হাতেও নিয়েছেন তিন উইকেট৷ যুব দলের হয়ে এর আগেও প্রমাণ করেছেন নিজেকে৷ এবার বড় মঞ্চে, স্নায়ু চাপের ফাইনালে দেখালেন বীরত্ব৷

যুবাদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে খুশির জোয়ার টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায়। এদিকে রিজওয়ানকে নিয়ে গর্বিত তার জেলা পঞ্চগড়ের সর্বস্তরের মানুষ। এই ক্রিকেটারকে অভিনন্দন জানানোর হিড়িক পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তার সুন্দর ভবিষ্যতে আত্মবিশ্বাসী সবাই। সকলের প্রত্যাশা- জাতীয় দলে খেলবে রিজওয়ান, ক্রিকেটকে ভালো কিছু উপহার দিবে।

এই ক্লাব থেকেই উঠে এসেছেন রিজওয়ান।

পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পর্যায়ে উঠে এসেছেন রিজওয়ান। ওই ইউনিয়নের কালুরহাট গ্রামে বেড়ে ওঠা তার। রিজওয়ানের বাবা চৌধুরী মোহাম্মদ তানভীর যোবায়ের ছিলেন সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। 

রিজওয়ানের ক্রিকেট চর্চায় সঙ্গী ছিলেন পঞ্চগড়ের ক্রীড়া সংগঠক হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘রিজওয়ান আমার ‘মার্ক স্পোর্টিং ক্লাব’ টিমে খেলেছিলো এবং পঞ্চগড় মাঠে ছক্কা-বাউন্ডারিতে মাঠের দর্শকের মন জয় করেছিল। আমি যতটা কাছে থেকে দেখেছি, সে পরিশ্রমে বিশ্বাসী একজন ক্রিকেটার। যার বলেই রিজওয়ান চাপ কাটাতে পেরেছেন। তার শক্তির জায়গা হলো ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংও করতে পারে। রিজওয়ান আমাদের পঞ্চগড় জেলার গর্ব, নিশ্চয়ই সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সে একদিন জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করবে।’

রিজওয়ানের ক্রিকেট চর্চায় সঙ্গী পঞ্চগড়ের ক্রীড়া সংগঠক হাবিবুর রহমান।

রিজওয়ানকে নিয়ে দেবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘দেবীগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান শরিফুলের পরে রিজওয়ান বাংলাদেশের হয়ে বিশ্ব দরবারে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। একই জেলা এবং একই উপজেলা থেকে দুইজন ক্রিকেটার বাংলাদেশের হয়ে খেলছে যা সত্যি অভাবনীয়। আমরা প্রত্যাশা করছি রিজওয়ান সামনে জাতীয় দলেও জায়গা করে নিবে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ভালো কিছু উপহার দিবে। রিজওয়ানের জন্য শুভকামনা রইলো।’

এশিয়া কাপ জয়ী রিজওয়ান এর সাফল্যে খুশি তার পরিবারের সদস্যরা। বাড়িতে চলছে উৎসবের আমেজ। রিজওয়ানের বাবা চৌধুরী মোহাম্মদ তানভীর যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘রিজওয়ানের সাফল্যে আমরা আনন্দিত। রিজওয়ানকে আমি বেশি সময় দিতে পারিনি, তার সাফল্যের পিছনে সব থেকে বেশি অবদান ওর মায়ের। এছাড়া ক্রিকেট একাডেমির শিক্ষকদের সহযোগিতা এবং দিকনির্দেশনায় আজ সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারছে। জানুয়ারিতে ওর যুব বিশ্বকাপ। সে যেন সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বাংলাদেশের সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে পারে সকলের কাছে এই দোয়া চাই।’

রিজওয়ানের সঙ্গে তার বাবা-মা।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের যুব বিশ্বকাপ জয়ী বাংলাদেশ দলের সদস্য ছিলেন একই জেলার শরিফুল ইসলাম। চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার হওয়ার পর তার নামের পাশে যুক্ত হয়েছিল ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ খ্যাতি। বিশ্বকাপ জয়ে পঞ্চগড়বাসীর স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল শরিফুল। ফলে জেলাজুড়ে তাকে নিয়ে ছিল উচ্ছ্বাস। এরপর জেলার মানুষের মনে তৈরি হয়েছিল নতুন এক আকাঙ্ক্ষা। সে সময় পঞ্চগড় থেকে উঠে আসা যে কয়েকজন ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলো তাদের একজন রিজওয়ান। বছর তিনেকের মাথায় সে এখন এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন।