খেলাধুলা

ধ্রুপদী অশ্বিনে মাটি বাংলাদেশের সুন্দর সকাল

‘মর্নিং শোস দ্য ডে’। সকাল বলে দেয় দিনটা কেমন যাবে। অন্তত চীপকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। 

চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টম্বর) প্রথম টেস্টের সকালে সবকিছুই বাংলাদেশের পক্ষে ছিল। মেঘলা আবহাওয়ায় টস জয়ের পর বোলিং। হসান মাহমুদের তোপে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ধস। এরপর রবীচন্দ্রন অশ্বিন যেন এলেন অবতার হয়ে। অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে দিনটা নিজের করে নেন। তাতে মাটি হয় বাংলাদেশের সুন্দর সকাল।

৮০ ওভারে প্রথম দিন শেষে ভারতের রান ৬ উইকেটে ৩৩৯। অশ্বিন ১০২ ও রবীন্দ্র জাদেজা ৮৬ রানে অপরাজিত আছেন। দুজনের জুটি শুরুর আগে ভারতের রান ছিল ৬ উইকেটে ১৪৪। বাংলাদেশ যখন দুই’শর আগে ভারতকে অলআউটের স্বপ্ন দেখছে তখন ১৯৫ রানের জুটি গড়ে দুঃস্বপ্নে রুপান্তরিত করেন তারা দুজনে। 

অশ্বিন-জাদেজা ব্যাটিং করেছেন ওয়ানডে স্টাইলে। মাত্র ১০৮ বলে ১০টি চার ও ২টি ছয়ের মারে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন অশ্বিন। জাদেজাও ছুটেছেন একই পথে। তার ৮৬ রান আসে ১০৭ বলে। চার-ছয়ের সংখ্যা অশ্বিনের সমান! জুটির ১৯৫ রান আসে মাত্র ২২৭ বলে। এই দুই ব্যাটারের আক্রমণে বাংলাদেশের বোলিং হয়ে যায় দিশেহারা।

এই জুটির আগে ভারতের পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি ছিল মাত্র ১টি!  চতুর্থ উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬২ রান আসে ঋষভ পান্থ-জয়সওয়ালের ব্যাট থেকে। ৩৯ রানে পান্থ ফিরলে ভাঙ্গে এই জুটি। এরপর পঞ্চম উইকেটে জয়সওয়ালের সঙ্গী হন লোকেশ রাহুল। দুজনে প্রতিরোধ গড়ে এগোচ্ছিলেন। শুরু থেকে স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়া জয়সওয়াল থামলে এই জুটির সমাপ্তি ঘটে। ৪৮ রান আসে জুটি থেকে। ৬২ রান করেন জয়সওয়াল।

অথচ প্রথম তিন জুটির কোনোটি থেকে বিশের বেশি আসেনি। একে একে সাজঘরে ফেরেন রোহিত শর্মা (৬), শুভমান গিল (০) ও বিরাট কোহলি (৬)! স্বল্প বিরতিতে ফেরেন পান্থ ও রাহুল (১৬)। একটি ছাড়া সবকটি উইকেটই হাসানের। দুর্দান্ত বোলিংয়ে চিপকে সব আলো কেড়ে নেন লক্ষ্মীপুর এক্সপ্রেস। কিন্তু বেলা গড়াতে গড়াতে অশ্বিন দেখা দেন ধ্রুপদী হয়ে।

১৪ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন হাসান। ১টি করে উইকেট নেন নাহিদ রানা ও মেহেদী হাসান মিরাজ। নির্বিষ বোলিং করেছেন সাকিব আল হাসান। ৫৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই হজম করেন চার। শেষ পর্যন্ত তিন ৮ ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান!

স্পিনারদের এলোমেলো বোলিংয়ে দিশেহারা অধিনায়ক শান্ত নিয়ে আসেন মুমিনুল হককেও। কিন্তু ১ ওভারে ৪ রান দেওয়া মুমিনুল শান্তকে উপহার দিতে পারেননি উইকেট।

দিনশেষে হাসানও বলছেন গুছিয়ে বোলিংয়ের কথা, ‘আমার মনে হয়, আরেকটু বাউন্ডারি কমিয়ে বোলিং করা দরকার ছিল। আরেকটু গুছিয়ে বোলিং করতে পারলে রান আরেকটু কম হতো। তবে চেষ্টা করতেছি যেন আরেকটু গুছিয়ে বোলিং করা যায়।’

টেস্টের মাত্র প্রথম দিন গিয়েছে। বাংলাদেশ শুরুতে দেখিয়েছে সহজে তারা হাল ছাড়ছেন না। ভারতকে আটকানোর জন্য দ্বিতীয় দিনের সকাল অতি গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম সকালের মতো দ্বিতীয় সকালও কি সুন্দর হবে?