বয়স ৩৮ পেরিয়ে যাওয়া নোমান আলী সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই। অক্টোবরে ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তান ধরাশায়ী হওয়ার পর দলে ডাক পান নোমান আলী। এরপর দুই ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে ও পাকিস্তানকে সিরিজ জিতিয়ে লিখলেন দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প। আর সেই গল্পের নায়ক এবার জিতলেন আইসিসির অক্টোবর মাসের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পুরস্কারও।
এ যাত্রায় তিনি পেছনে ফেলেছেন নিউ জিল্যান্ডের মিচেল স্যান্টনার ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসু রাবাদাকে। যারা ভারত ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ করেছিলেন বল হাতে। শুধু তাই নয়, ২০২৩ সালের আগস্টে সবশেষ পাকিস্তানি ক্রিকেটার হিসেবে বাবর আজম জিতেছিলেন আইসিসির মাসসেরা হওয়ার পুরস্কার। লম্বা সময় পর এবার জিতলেন নোমান।
পুরস্কার জেতার পর নোমান বলেছেন, ‘আইসিসির মাসসেরা খেলোয়াড় হয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি আমার সতীর্থদের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ যারা আমাকে ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্স করতে সহযোগিতা করেছে এবং ঐতিহাসিক সিরিজ জিততে সাহায্য করেছে। দেশের এমন স্মরণীয় জয়ের অংশ হতে পারা সব সময়ই দারুণ ব্যাপার।’
অক্টোবরে ঘরের মাঠে নোমান ম্যাচের বাক বদলে দেওয়া পারফরম্যান্স করেন। প্রথম ম্যাচে ১৪৭ রান দিয়ে ১১টি ও দ্বিতীয় ম্যাচে ১৩০ রান দিয়ে ৯টি উইকেট নেন। তাতে তিন বছর পর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে জিতে পাকিস্তান।
মুলতানে দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে ২৯৭ রানের টার্গেট দিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু নোমান ইংল্যান্ডের সব রক্ষণ ও আক্রমণ গুঁড়িয়ে দেন স্পিন ঘূর্ণিতে। ৪৬ রান দিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ৮ উইকেট শিকার করেন। তাতে ইংল্যান্ড অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১৪৪ রানে। আর পাকিস্তান ১৫২ রানের জয়ে সিরিজে ফেরায় সমতা। প্রথম ইনিংসে নোমান নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।
সিরিজের শেষ ম্যাচে রাওয়ালপিন্ডিতে বল ও ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স শো করেন নোমান। পাকিস্তান যখন ১৭৭ রানেই ৭ উইকেট হারায় তখন তিনি মাঠে নামেন। এরপর ৪৫ রানের ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে ৭৭ রানের লিড এনে দেন।
তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেওয়া নোমান এবার দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে অলআউট করেন ১১২ রানে। তাতে মাত্র ৩৬ রানের মামুলি টার্গেট পায় স্বাগতিকরা। যা ১ উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলে এবং সিরিজ জয় নিশ্চিত করে।
নোমানের সঙ্গে মাসসেরা হওয়ার দৌড়ে থাকা রাবাদা বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টে ১৪ উইকেট নেন। এ যাত্রায় তিনি টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ৩০০ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেন। অন্যদিকে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে দুই ইনিংসে ১৩ উইকেট নিয়ে ৯৭ বছর পর ভারতের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডকে সিরিজ জেতান স্যান্টনার। ১৩ উইকেটের পাশাপাশি ৩৩ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তিনি। যদিও ইনজুরির কারণে পরের টেস্টে খেলতে পারেননি তিনি।