ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৬ ১৪৩১

অবশেষে জামিনে মুক্ত জামাল মিয়া, ৪ শিশুর দায়িত্ব নিলো জেলা প্রশাসন

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ১৪ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৯:৪৮, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
অবশেষে জামিনে মুক্ত জামাল মিয়া, ৪ শিশুর দায়িত্ব নিলো জেলা প্রশাসন

আদালতের নির্দেশে জামাল মিয়ার ৪ সন্তানের দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে জেলা প্রশাসন

অবশেষে আদালতের নির্দেশে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন গোপালগঞ্জের আলোচিত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার চার সন্তানের বাবা জামাল মিয়া। এদিকে, জামাল মিয়ার চার সন্তানের দেখভাল ও পড়াশুনার দায়িত্ব নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফিরোজ মামুন এ জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর সন্ধ্যায় জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এরআগে, লিগ্যাল এইডের কৌঁসুলি শারমিন জাহান জামাল মিয়ার জামিনের আবেদন করেন।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মতো জামাল মিয়ার চার সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বিকালে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আক্তার জামাল মিয়ার বাড়িতে যান। এ সময় পরিবারের সদস্যদের হাতে বিভিন্ন উপকরণ তুলে দেন ও সন্তানদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন।

আরো পড়ুন:

যমজ দুই কন্যাশিশুর জন্মের এক সপ্তাহের মাথায় জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগমের মৃত্যু হয়। এর কয়েক দিন পর গত ৮ নভেম্বর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান জামাল মিয়া। এমন পরিস্থিতিতে তিন বোনকে নিয়ে ১৩ বছরের সাজ্জাদ বিপাকে পড়ে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদ আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ। এমন সংবাদ নজরে আনায় স্বপ্রণোদিত হয়ে সেই শিশুদের দেখভালে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ সমাজসেবা কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।

বিষয়টি আদালতের নজরে আনার পর আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চান এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই শিশুদের খাবার-দাবার ও সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে আদেশ দেন।

অ্যাডভোকেট শারমিন জাহান বলেন, ‘আমরা মানবিক বিষয়গুলো আদালতের সামনে তুলে ধরি। পরে আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফিরোজ মামুন মানবিক কারণে আসামি জামাল মিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে আজ সন্ধ্যায় জামাল মিয়া জেল থেকে মুক্তি পান।’

আরও পড়ুন: তিন বোন নিয়ে অথৈ সাগরে শিশু সাজ্জাদ

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনুর আক্তার জানান, ওই শিশুদের পরিবারের খোঁজখবর ও নগদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় খাদ্য ও শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়েছে। খোজঁখবর রাখা হচ্ছে শিশুদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে।

এক মাস আগে জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথি বেগম একসঙ্গে দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এর সাত দিন পর তার মৃত্যু হয়। এরপর চার সন্তানের লালনপালন করছিলেন জামাল মিয়া। তার বড় ছেলে সাজ্জাদ এম এম খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দিদার হত্যা মামলায় জামালকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় কোটালীপাড়া পুলিশ। পরে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয় জামালকে। পরে শনিবার জামালকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বাদল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়