আবারো আলোচনায় এলেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিলে ভোটরদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের সমর্থনে চরপার্বতী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে আয়োজিত কর্মীসভায় একথা বলেন আবদুল কাদের মির্জা। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুল কাদের মির্জা ভোটারদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘আমার কথা সোজাসুজি। বাঁকা কথা আমি বলি না। পরে ভেজাল হয়ে যাবে। কী বলছি বুঝেছেন তো? এমনি ভালো আছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়েছে? আপনারা শান্তিতে আছেন। ভোট যদি আমাদের তিন জনকে (চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়রিম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান) দেন, তাহলে কেন্দ্রে আসিয়েন। না হয়, পরে ঝামেলা হলে আমি দায়িত্ব নিতে পারব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু শুধু কষ্ট করে কেন্দ্রে আসবেন না। বাড়িতে ঘুমাইয়েন। তাহলে পরে নিরাপদে বাকি পাঁচটা বছর থাকতে পারবেন।’
আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান বাদল। তিনি জানান, ‘এখনো প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমাও শেষ হয়নি। এমন অবস্থায় কাদের মির্জা পরিবারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হবে।’
এ বিষয়ে আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল জানান, বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তিনি বলবেন। প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীর পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রচারণার কোনো সুযোগ নেই।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি সভা কিংবা কর্মীসভা করার সুযোগ নেই। এছাড়া, প্রারণাকালে ভোট না দিলে ভোটারদের কেন্দ্রে না যেতে বলাও বেআইনি।
প্রসঙ্গত, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৯ মে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ওমর আলী। এর মধ্যে মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল আবদুল কাদের মির্জার সমর্থিত প্রার্থী। তিনি ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পারভীন আক্তারকে সমর্থন দিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।