জিম্বাবুয়েতে দল যখন হারের তিক্ত স্বাদ পাচ্ছিল তখন দেশের পথে ছিলেন কাজী নুরুল হাসান সোহান। খেলা দেখতে পারেননি। বিমানে স্কোরবোর্ড দেখছিলেন আর আফসোস করছিলেন— ইশ! আমি যদি থাকতাম!
সিরিজ হার নিয়ে তার মন্তব্য, ‘অবশ্যই, খারাপ তো লাগবেই। হারলে তো খারাপ লাগবেই। আমিও থাকতে পারিনি, নিজের কাছে খারাপ লাগছে। যেহেতু খেলাও দেখিনি, কোনো মন্তব্যও করতে পারছি না।’
সোহান থাকলে ম্যাচের ফল পরিবর্তন হতো কিনা সেটা শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলা যায় না। তবে এতোটুকু বলা যায়, তেজস্বী এ ক্রিকেটার জয়ের শতভাগ চেষ্টা করতেন। জিম্বাবুয়ের বোলারদের বিরুদ্ধে আক্রমণে গিয়ে রান তোলার চেষ্টা করতেন, ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ, ইনটেন্ট থাকতো ভিন্ন।
১৫৬ রান তাড়ায় বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ১০ রানে। প্রথম ম্যাচেও বাংলাদেশ খুব কাছে গিয়ে ১৭ রানে হেরেছিল। সেদিন অবশ্যই দুই’শ-এর বেশি রান তাড়া করছিল অতিথিরা। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সমীকরণ প্রায় মিলিয়ে দিয়েছিলেন সোহান। ২৬ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। যেখানে চার ছিল ১টি, ছক্কা ৪টি। হাতে বল না থাকায় সোহানের ইনিংসটিও বৃথা যায়।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে কিপিংয়ের সময় ব্যথা পাওয়ায় তাকে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। এজন্য শেষ টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজ খেলা হচ্ছে না তার। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এশিয়া কাপ। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপকে টার্গেট করেই মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নেবেন বলে জানিয়েছেন সোহান।
দেশে ফিরে সোহান বলেছেন, ‘আশা করি এশিয়া কাপের আগে সেরে উঠব। কাল একটা এপয়েন্টমেন্ট আছে (ডাক্তারের সাথে)। এটার ওপর নির্ভর করছে। ইনশাআল্লাহ, তিন সপ্তাহের মধ্যে সেরে উঠব। ফ্র্যাকচার আছে, হাড় একটু সরে গেছে।’
তবে আজ বিসিবি চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীকে নিজের আঙুল দেখিয়ে ভালো কোনো খবর পাননি সোহান। উল্টো তাকে বিদেশ পাঠানোর খবর জানানো হয়েছে। মুঠোফোনে দেবাশীষ চৌধুরী বলেছেন, ‘সোহানকে দেশের বাইরে পাঠানো হবে। কোন দেশে পাঠানো হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তিন-চার জায়গায় কথা হচ্ছে। কোথায় পাঠানো হবে, তা আগামীকাল (০৪ আগস্ট) নিশ্চিত করা যাবে।’
এশিয়া কাপ খেলতে হলে সোহানকে এক সপ্তাহ আগে ফিট হয়ে উঠতে হবে। তাড়াহুড়ো করে তাকে মাঠে নামার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানান বিসিবির প্রধান চিকিৎসক, ‘এশিয়া কাপের আগে হাতে দুই-তিন সপ্তাহ সময় আছে। এশিয়া কাপ খেলতে হলে সোহানকে অন্তত এক সপ্তাহ আগে সুস্থ হতে হবে।’
‘আমরা ফিঙ্গার স্পেশালিস্ট চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করব। সার্জারি লাগবে কিনা, সেটা তখন বলা যাবে। তবে এশিয়া কাপের জন্য ওকে তাড়াহুড়ো করে মাঠে নামার অনুমতি দেওয়া হবে না। সামনে বিশ্বকাপ এবং ওর পুরো ক্যারিয়ারটাই পড়ে আছে।’ —যোগ করেন তিনি।
শেষ ১৩ টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ২টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে দলের এমন পারফরম্যান্স চিন্তার বড় কারণ। সোহানের বিশ্বাস, কিছু জায়গায় উন্নতি হলে এশিয়া কাপ থেকেই ভালো ফল পাওয়া যাবে। তার ভাষ্য, ‘টি-টোয়েন্টিতে আমাদের উন্নতির অনেক জায়গা আছে। শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান (এশিয়া কাপে একই গ্রুপে) দুটো দলই খুব ভালো প্রতিপক্ষ। আমরা নিজেদের শতভাগ দিয়ে ঘাটতির জায়গাগুলোয় কিছুটা উন্নতি করলে ভালো ফলাফল হবে। উন্নতির জায়গায় মনোযোগ দিতে হবে যাতে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে ভালো করতে পারি। এশিয়া কাপের এখনও সময় আছে। ভিন্ন একটা টুর্নামেন্ট।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপ শুরু হবে ২৭ আগস্ট। দুবাই ও শারজায় হবে টুর্নামেন্টের ১৩টি ম্যাচ। প্রথম রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। ‘এ’ গ্রুপে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গী হবে বাছাইপর্ব থেকে উঠে আসা একটি দল। এরপর সুপার ফোরে লিগ পদ্ধতিতে শীর্ষ দুই দল যাবে ফাইনালে।
গতবার এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ও ভারত ফাইনাল খেলেছিল। এবার বাংলাদেশ কতদূর যায় সেটাই দেখার।