বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স বেশ উদ্বেগজনক। যারা নিয়মিত টি-টোয়েন্টি খেলে আসছেন তারা যেন পারফর্ম করাই ভুলে গেছেন। ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে রান নেই। বোলারদের নেই উইকেট। এছাড়া ফিল্ডিংটাও রয়ে গেছে আড়ালে।
ব্যবধান গড়ে দেওয়া পারফরম্যান্সের ঘাটতি, ম্যাচ পাল্টে দেওয়ার মতো ছোট-বড় ইনিংস নেই, বোলিংয়ে এক-দুই ওভারের দুর্দান্ত স্পেল নজরেই আসেনি। অথচ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বছরে বিপিএল আর্শীবাদ হয়ে এসেছে ক্রিকেটারদের কাছে। জাতীয় দলের নিয়মিত ক্রিকেটাররা যেমন আড়ালে, প্রতিশ্রুতিশীল কেউ-ই নজর কাড়তে পারছেন না। ফলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স রীতিমত হতাশার।
জাতীয় দলের দুই ওপেনার লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ। লিটন ৫ ম্যাচে রান করেছেন ৩৭। শান্ত ৭ ম্যাচে ৭৩। দুজনের আউটের নেই কোনো ব্যাখ্যা। বোলারকে উইকেট উপহার দিয়ে আসছেন প্রতিবারই। গত বিপিএল দিয়ে লাইমলাইটে আসা তাওহীদ হৃদয় ৫ ম্যাচে করেছেন ১২৬ রান। তানজিদ তামিম ৬ ম্যাচে ১৩২ রান। এনামুল হক বিজয় দুটি ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলার পরও রান ৫ ম্যাচে ১৪২। জাকির হাসান ৭ ম্যাচে ১৯৩ রান করলেও সিলেটের একমাত্র জয়ে কোনো অবদান রাখতে পারেননি।
জাতীয় দলের নির্বাচক ও স্থানীয় কোচরা ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান একেবারেই উদ্বিগ্ন নন নিজেদের পারফরম্যান্সে। বরং টানা খেলার ভেতরে থাকায় রিল্যাক্স ভাব থাকতে পারে এমন ধারণা করছেন তিনি। জাতীয় দলের খেলা শুরু হলে সবাই অফফর্ম কাটিয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস তার। শনিবার সিলেট পর্বের শেষ ম্যাচ খেলে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন রংপুর রাইডার্সের হয়ে বিপিএল খেলা সাকিব। সেখানে জাতীয় দলের প্রসঙ্গ উঠতেই সাকিবের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘এটা নিয়ে আলোচনা না করাই ভালো। সবাই যখন জাতীয় দলে খেলবে…আমি মনে করি সবাই যার যার জায়গাতেই আছে। ভালো অবস্থাতেই আছে।’
বোলিংয়ে পেসারদের থেকে স্পিনারদের পারফরম্যান্স মোটামুটি ভালো। মাহেদী হাসান ৬ ম্যাচে ১০ উইকেট পেয়েছেন ৫.৮৩ ইকোনমিতে। পেসার শরিফুল ১০ উইকেট পেয়েছেন ৮.৩৬ ইকোনমিতে। এছাড়া তানভীর ৯, হাসান মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান ৭টি করে উইকেট পেয়েছেন।
পারফরম্যান্স ভালো মানের কিংবা প্রত্যাশামাফিক না হওয়ার পেছনে সাকিব কাঠগড়ায় দাড় করালেন উইকেট ও কন্ডিশনকে, ‘বিপিএল একটা কঠিন প্রতিযোগিতা। এবারের উইকেট গুলো খুব আইডিয়াল না। গতবার উইকেট ও কন্ডিশন খুব ভালো ছিল। প্রচুর রানও হয়েছিল। যেটা এবার আসলে হচ্ছে না।’ সঙ্গে টানা খেলার প্রসঙ্গও সামনে আনলেন তিনি, ‘স্বাভাকিভাবে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা বেশি খেলতে খেলতে একটু রিল্যাক্স হয়ে যায়। হয়তো এরকম একটা টুর্নামেন্টে সময় নিচ্ছে। হয়তো এখান থেকে বিল্ড আপ করতে করতে ওয়ার্ল্ডকাপে গিয়ে হয়তো টিম ভালো করবে। আমার কাছে মনে হয় না এটা নিয়ে হতাশ বা উদ্বিগ্ন হবার কিছু আছে। আমি নিশ্চিত যারা দলে থাকবে তারা নিজেদের জায়গা থেকে ভালো করবে। দল হিসেবে শেষ এক দেড় বছর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভালো করছে। আমি আশা করবো সবাই যেন ভালো করে।‘
বিপিএল কেবল অর্ধেক পেরিয়েছে। সামনের লড়াইটা আরো প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ হবে। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স সামনে কেমন হয় সেটাই দেখার।