কোপা আমেরিকার চলতি আসরে অংশ নিয়েছে ষোলটি দল। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক দলের কোচিং প্যানেলেই আর্জেন্টাইন কোচদের ছড়াছড়ি। সাতটি দলকেই গাইড করছেন আর্জেন্টাইনরা। এর মধ্যে আবার ছয়জনই লাতিন আমেরিকার। বলা যায়, কোপা আমেরিকা আর্জেন্টাইন কোচদের চেনা রাজ্য।
এবারের আসরে দক্ষিণ আমেরিকার ছয় দেশ আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, চিলি, প্যারাগুয়ে এবং উত্তর আমেরিকার কোস্টারিকা, এই প্রতিটি দলের কোচই আর্জেন্টাইন। এর আগে ২০১৫ কোপা আমেরিকার চার সেমিফাইনালিস্ট দলের কোচই ছিলেন আর্জেন্টাইন।
প্রশ্ন জাগতে পারে কোপাতে আর্জেন্টাইন কোচদের আধিক্যের কারণ কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে তাদের যে গুণটা সামনে আসবে সেটা হলো, তারা একই সাথে ভালো ট্যাকটিশিয়ান এবং নেতা হয়ে থাকেন। আর যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিতে পারেন নিজেদের কাজ দিয়েই। এমনটাই উঠে এসেছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে।
উদাহরণ খুঁজতে গেলে দেখা যায়, ২০২২ সালে নেস্তর লরেঞ্জো যখন কলম্বিয়ার কোচ হলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে স্রেফ ধুয়ে দিয়েছিলেন কলম্বিয়ানরা। কিন্তু দায়িত্ব পাওয়ার পরই সব চিত্র পাল্টে দিলেন লরেঞ্জো। কোপা আমেরিকা শুরুর আগে টানা ১৯ ম্যাচ রইলেন অপরাজিত।
আর্জেন্টিনার কোচদের আরেকটা বড় গুণ, দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোর সংস্কৃতির সাথে সহজেই মানিয়ে নিতে পারেন। যে কারণে ব্রাজিলের ঘরোয়া লিগেও আর্জেন্টাইনদের ছড়াছড়ি। অ্যাটলেটিকো মিনেইরো, ভাস্কো দা গামা, ইন্টারন্যাসিওনাল, ক্রুজেইরো, ফোর্তালেজাকে কোচিং করাচ্ছেন আর্জেন্টাইনরাই। দিয়েগো সিমিওনে, মরিসিও পচেত্তিনো, জেরার্ডো মার্টিনোও চেনা মুখ।
আর্জেন্টাইনরা ট্যাকটিশিয়ান হওয়ার কারণে অভিজ্ঞতা ছাড়াই সফল হওয়ার নজির রয়েছে। লিওনেল স্কালোনির কথাই ধরা যাক। আর্জেন্টিনার অন্তর্বর্তীকালীন ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় তার কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না। তিনিই দলকে এনে দিয়েছেন কোপা আমেরিকা, বিশ্বকাপ ও ফিনালিসিমা।
উরুগুয়ের বর্তমান কোচ মার্সেলো বিয়েলসার কথাও একটু আলাদা করে বলতেই হচ্ছে। তার প্রভাবটা এতোই যে, আর্জেন্টিনার অন্যান্য কোচদের ভেতর ছড়িয়ে গেছে দর্শন। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের দায়িত্বে থাকা এই কোচকে ‘কোচদের কোচ’ বলা হয়।