সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল রায় বাতিল ও কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো খুলনায় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।
শনিবার (৬ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে এসে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট শিববাড়ী মোড়ে অবস্থান নেয়। এ সময় তাদের মিছিল ও মুহূর্মুহু স্লোগানে গোটা এলাকা উত্তাল হয়ে ওঠে।
অবরোধ চলাকালে নগরীর লোয়ার যশোর রোড, মজিদ সরণী ও কেডিএ এভিনিউতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
খুবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবির হাসান বলেন, ‘কোটা বহলের পক্ষে আদালতের রায় দুঃখজনক। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।’
খুবির আরেক শিক্ষার্থী আজাদ মিয়া বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
একই দাবিতে খুবি শিক্ষার্থীরা গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ও শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ পদ সংরক্ষিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। পরে সেই বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটি চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে গত ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছেন।